।।আকাশ মারমা মংসিং বান্দরবান।।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপুজা। আর কয়েকদিন বাদেই দেবী দুর্গা আসছেন। দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে বিরাজ করছে সাজ সাজ রব। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালনের জন্যই দেবী দুর্গার স্বর্গ থেকে আগমন ঘটেছিল মর্ত্যলোকে। এরই ধারাহিকতায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা প্রতি বছর শারদীয় উৎসব হিসেবে দুর্গাপুজা উদযাপন করে আসছেন। উৎসব সামনে রেখে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। শিল্পীদের হাতের ছোঁয়ায় মাটির প্রতিমা হয়ে উঠছে অপরূপ। একই সঙ্গে দুর্গোৎসবকে পরিপূর্ণ করতে দিনরাত মন্দিরগুলোতে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি।
পূজা উপলক্ষে চারিদিকে ঘিরে আলোকসজ্জা, মেলার আয়োজন, আরতি প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ সব প্রস্তুতি প্রায় শেষের পথে। দেবী দুর্গাকে বরণ করে নিতে মন্ডপে মন্ডপে চলছে নানা প্রস্ততি। দেবি দূর্গা আগমনে অপেক্ষা ও কবে দেবী দূর্গা আগমন ঘটবে সে আশায় প্রহর গুনছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। তছাড়া উৎসবকে ঘিরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থার দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
উৎসব উদযাপন কমিটির তথ্যনুযায়ী, বান্দরবানে ৭টি উপজেলায় ৩১টি সর্বজনীন পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ৯ অক্টোবর শুরু হচ্ছে দুর্গাপূজা। ৯ অক্টোবর থেকে শুরু হবে ষষ্ঠীপূজা। ১০ অক্টোবর সপ্তমী, ১১ অক্টোবর অষ্টমী, ১২ অক্টোবর নবমী, ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্যে দিয়ে ৫ দিনব্যাপী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার পরিসমাপ্তি ঘটবে।
সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের মতে, দুর্গাপূজার প্রধান অনুষঙ্গ দেবী দুর্গার প্রতিমা।ধর্মের প্রতি বিশ্বাস, দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালনের জন্যই স্বর্গ থেকে মর্ত্যলোকে দেবী দুর্গার আগমন ঘটে। এরই ধারাবাহিকতায় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা প্রতিবছর শারদীয় উৎসব হিসেবে দুর্গাপূজা উদযাপন করে আসছে।
এই উৎসবকে ঘিরে শিল্পীরা প্রতিমার গায়ে শেষ তুলির আঁচড় টানতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কাদামাটি, বাঁশ, খড়, সুতলি দিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় গড়ে তোলা হয়েছে দেবী দুর্গার প্রতিমা। দম ফেলার সময় নেই কারিগরদের। সুনিপুণ হাতে মাটি ও রংতুলির ছোঁয়ায় দেবীকে রাঙিয়ে তুলতে ব্যস্ত শিল্পীরা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করছেন তারা। নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় তৈরি হচ্ছে দেবী দুর্গা, লক্ষ্মী সরস্বতী, কার্তিক, অসুরসহ বিভিন্ন দেব-দেবীর মূর্তি। মণ্ডপগুলোতে চলছে প্রতিমা তৈরি ও শেষ সময়ের সাজসজ্জা।
শিল্পীরা জানান, প্রতিবছরই তারা অধীর আগ্রহে দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরির কাজের অপেক্ষায় থাকেন। পূজা শুরুর আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি। দম ফেলার সময় নেই। এর মধ্যেই দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরির প্রায় কাজ শেষ হয়েছে। শুধু জীবিকার জন্যই নয়, দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে তাদের ধর্মীয় অনুভূতি, ভক্তি আর ভালোবাসা। তাইত দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন দেবী দুর্গা আগমন ঘটবে বলে।
প্রতিমা তৈরির কারিগর তারক নাথ বলেন, এখনই বছরের সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত সময় পার করছি। ‘যত কষ্টই করি না কেন, যখন দেবীকে তার স্বরূপে মণ্ডপে বসানো হবে, তখন সব কষ্ট দূর হয়ে যায়।
বান্দরবান শ্রীশ্রী সার্বজনীন দূর্গাপুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রাজেশ্বর দাশ (বিপ্লব) বলনে, দেবী দুর্গাকে বরণ করে নিতে মন্ডপে মন্ডপে চলছে প্রস্ততি। এ বছর বান্দরবান ৭টি উপজেলায় ৩১টি সর্বজনীন পূজামন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। তাছাড়া এই উৎসবকে ঘিরে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পক্ষ থেকে সব ধরনের নিরাপত্তার জোরদার করা হয়েছে বলে জানান।
বান্দরবান জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হোসাইন মো. রায়হান কাজেমী বলেন, জেলার সকল পূজামণ্ডপে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। সাদা পোশাকে ও মোবাইল কোর্ট টিম টহলে রয়েছে। পূজামণ্ডপে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে পুলিশ প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন।