বিশেষ প্রতিনিধি।।বান্দরবান।।
গেল মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে তারাবির নামাজ চলাকালে পাহাড়ি সশস্ত্র গ্রুপ কুকি-চিন ন্যশনাল ফ্রন্ট কেএনএফ সন্ত্রাসীরা মসজিদ,উপজেলার পরিষদ ও সোনালী ব্যাংক চারিদিকে ঘেরাও করে ফেলে। পরে বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকের শাখায় ঢুকে ব্যাংকের ভোল্ট ভেঙে টাকা লুটে করে। এ সময় তারা ব্যাংকের আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের অস্ত্রও লুট করে। একইসাথে স্থানীয়দের মারধর ও মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি মসজিদ থেকে ব্যাংকের ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
এদিকে গেল ৩৬ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও এখনো উদ্ধার হয়নি অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনের। যৌথবাহিনী উদ্ধারের অভিযান চালাচ্ছেন কীনা সে ব্যাপারেও এখনো জানা যায়নি। তবে আইনশৃঙ্খলা উর্ধতন কর্মকর্তারা বলছেন ম্যানেজারকে উদ্ধার করতে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনায় অপহৃত ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনের কোন খোঁজ না মেলায় উদ্বিগ্ন তার পরিবার ও স্বজনরা। কোন যোগাযোগ করতে না পারায় হতাশ হয়ে পড়েছেন পরিবারসহ ব্যাংকের কর্মচারীরা।
তবে ৩৬ ঘন্টা পরও অপহরণের ব্যাংকটি ম্যানেজার উদ্ধার না হলেও তবে তার সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আফজাল করিম।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) তিনি গনমাধ্যমকে এই তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
সোনালী ব্যাংকের এমডি আফজাল করিম বলেন, “রুমার ব্রাঞ্চ ম্যানেজার সুস্থ আছেন, তার সঙ্গে কথা হয়েছে।”
বান্দরবানের রুমায় ব্যাংক ডাকাতির তিন দিন পরও সোনালী ব্যাংকের অপহৃত ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনের কোন খোঁজ না মেলায় উদ্বিগ্ন তার স্বজনরা। তবে তাকে উদ্ধার করতে এবং সন্ত্রাসীদের ধরতে রুমায় তল্লাশি চালাচ্ছে যৌথ বাহিনী। পুলিশের টহলও জোরদার করা হয়েছে। ব্যাংক ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে সুস্থ অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেছেন তার স্ত্রী ইশফাত।
পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ জিআইজি নূরে আলম মিনা বলেছেন, “অপহৃত ম্যানেজারকে উদ্ধারে আমরা কাজ করছি।”
এদিকে নিরাপত্তার স্বার্থে বান্দরবানে তিন উপজেলার সোনালী ব্যাংকের সব কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় বান্দরবানে বৃহস্পতিবারও সোনালী ব্যাংকের সাতটি শাখার মধ্যে তিনটি শাখা বন্ধ রয়েছে বলে জানা গেছে। শাখাগুলো হলো- রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়ি। এসব শাখার গ্রাহকরা অন্য শাখা থেকে লেনদেন করতে পারবেন। পরপর দু’দিন অস্ত্রধারীদের হামলার পর বুধবার (৩ এপ্রিল) সোনালী ব্যাংকের বান্দরবান সদর শাখা ছাড়া অন্যগুলো বন্ধ ছিল।
বান্দরবানের সোনালী ব্যাংকের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার ওসমান গনি বলেন, রুমা শাখার ভল্ট খতিয়ে দেখে সব টাকা অক্ষত পাওয়া গেছে। কোনো টাকা খোয়া যায়নি। আর থানচি শাখায় কত টাকা খোয়া গেছে; পূর্ণাঙ্গ হিসাব চলছে। তবে খোয়া যাওয়া টাকার পরিমাণ ১৫ লাখ টাকার অধিক।