মানিকছড়ি মডেল ছাত্রাবাসটি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে আসবাবপত্র

0
43

মানিকছড়ি প্রতিনিধি।।খাগড়াছড়ি।।

মানিকছড়িতে নির্মাণের প্রায় এক যুগেও চালু হয়নি দুর-দুরার্ন্ত কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য নির্মিত উপজেলার একমাত্র রাজবাড়ি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসটি। ছাত্রাবাসের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নিয়োগ করা হয়নি কোনো জনবল, ফলে নষ্ট হচ্ছে আবকাঠামো আসবাবপত্র ও অন্যান্য সরঞ্জাম।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ঝড়েপড়া রোধে এবং দূর্গম এলাকার শিশুদের মানসম্মত শিক্ষার কথা বিবেচনা করে ১ কোটি ৬৭ লাখ ৩৬ হাজার টাকা ব্যয়ে ২০১১ সালের দিকে নির্মাণ করা হয় রাজবাড়ি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েল ছাত্রাবাস। পরের বছরের ৩১ মার্চ তৎকালীন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী আফছারুল আমীন ছাত্রাবাসটির শুভ উদ্বোধন করেন। যেখানে ৪০জন ছাত্র ও ৪০জন ছাত্রীসহ মোট ৮০জন শিক্ষার্থীর পৃথক আবাসন ব্যবস্থাসহ পড়াশোনা, খাওয়া-দাওয়া এবং খেলাধুলার জন্য রয়েছে আলাদা সুব্যবস্থা। লোডশেডিং এর কথা মাথায় রেখে রয়েছে সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা। আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্বেও কোনো কিছুই কাজে আসেনি এ উপজেলার কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভাগ্যে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ভবণের নির্মাণ কাজ শেষ করে নিয়মানুযায়ী সেটি পার্বত্য খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের নিকট হস্তান্তর করা হলেও এখন পর্যন্ত এটি চালুর বিষয়ে কোরো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। যার ফলে চোখের সামনে নষ্ট হচ্ছে বিশাল এ ভবনটি। অথচ এটি চালু হলে মানসম্মন শিক্ষার বড় একটি সুযোগ সৃষ্টি হতো শিক্ষার্থীদের।

এছাড়া দীর্ঘদিন ব্যবহার না করায় নষ্ট হয়ে গিয়েছে চেয়ার, টেবিল, খাট, সৌর বিদ্যুতের ব্যাটারি, মোটরে ও জেনারেটর। ভবণের বিভিন্ন স্থানে মরিচাসহ ফাঁটল ধরেছে ভবন দেয়ালে। সরকারের কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ছাত্রাবাসটি চোখের সমানে নষ্ট হলেও এখন পর্যন্ত এটি চালু করার কোনো উদ্যোগই গ্রহণ করেনি সংশ্লিষ্ট প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা অধিদপ্তর ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। হতাশ শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও সচেতন মহল। নতুন বছরে যেন কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য নির্মিত এ ছাত্রাবাসটি চালু করেন সংশ্লিষ্ট দপ্তর এমনটি দাবী করছেন স্থানীয় শিক্ষানুরাগীরা।

ছাত্রাবাসটি চালু করার জোড় দাবী জানিয়ে একাধিক অভিভাবক বলেন, নির্মাণের এক যুগেও এটির সুফল পায়নি শিক্ষার্থীরা। অথচ এটি চালু হলে থাকা-খাওয়া ও খেলাধুলাসহ আধুনিক সকল সুযোগ-সুবিধার মাধ্যমে গুণগত শিক্ষা লাভের সুযোগ পেত ছাত্রছাত্রীরা। এ সময় দ্রুত ছাত্রাবাসটি চালু করার দাবী জানান তারা।

রাজবাড়ী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ক্যজ মারমা বলেন, ছাত্রাবাসটি চালুর বিষয়ে একাধিকবার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে অনুরোধ করেও কোনো কাজে আসেনি। তবে এটি চালু হলে প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ঝড়ে পড়ার হার যেমন কমে আসবে, তেমনি মানসম্মত শিক্ষার সুযোগ আরো বৃদ্ধি পাবে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তপন কুমার চৌধুরী বলেন, ছাত্রাবাসটি চালু না হওয়ায় এটির বেশিরভাগ আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আমরা এটি পুনরায় মেরামত ও চালুর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদকে অবগত করেছি। আশা করি ছাত্রাবাসটি চালুর বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য এম.এ জব্বার বলেন, ছাত্রাবাস চুলুর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে এ সমস্যার সমাধান হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here