বান্দরবানে দিনদিন বাড়ছে ফিডনেসবিহীন চাদের গাড়ি

0
52

আকাশ মারমা মংসিং।।বান্দরবান।।

পর্যটন নগরী সৌন্দর্যে লীলাভূমি পার্বত্য জেলা বান্দরবান। এই পাহাড়ি কণ্যাখ্যাত জেলায় রয়েছে অসংখ্য ছোট বড় পাহাড়, ঝিড়িঝর্ণা ও দেশের সর্বোচ্চ উচুঁ পাহাড় কেউক্রাডং। এসব প্রকৃতি মাঝে গড়ে উঠা সৌন্দর্যে দেখতে প্রতি মৌসুমে আনাগোনা যেন শেষ নাই পর্যটকদের। পাহাড় আর মেঘের খেলার সৌন্দর্য উপভোগ করতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন ভ্রমন পিপাসুরা। কেউ আসে দলবেঁধে আবার কেউ আসে পরিবার পরিজনদের সাথে নিয়ে। তবে বান্দরবানে পর্যটকদের পরিবহনের সবচেয়ে জনপ্রিয় চাদের গাড়ি বা মাহিন্দ্রা। উঁচু নিচু পাহাড়ি সড়ক বেয়ে বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের নিয়ে ছুটে যায় এসব চাদের গাড়ি। খুব জনপ্রিয় হওয়াতেই সেসব চাদের গাড়ি মাধ্যমে একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে দাপিয়ে বেড়ান পর্যটকরা। কিন্তু অধিকাংশ চাদের গাড়িতে নাই লাইসেন্স আবার ফিডনেসবিহীন। জেলা শহর জুড়ে দিনের পরদিন বেড়ে চলছে অনিবন্ধিত চাদের গাড়ি। তাছাড়া সেসব গাড়ি চালক অদক্ষ ও বেপরোয়া চালানো কারণে আনন্দ মুহুর্তগুলো পরবর্তিতে নেমে আসে কালো ছায়া। যার ফলে প্রান হারাতে হয় পর্যটকদের। দুর্ঘটনা এড়াতে হলে পাহাড়ি সড়কের দক্ষ চালক ও মানসম্মত গাড়ি প্রয়োজন বলে দাবী সচেতন নাগরিক সমাজের ।

জানা গেছে,বান্দরবানে চিম্বুক-থানচি-রুমা-রোয়াংছড়ি-আলীকদমসহ বিভিন্ন সড়ক দিয়ে পর্যটন কেন্দ্রেগুলোতে পর্যটকদের নিয়ে চলাচল করছে প্রায় সাড়ে তিনশত অধিক চাঁদের গাড়ি। এসব সড়কের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যমও বলা চলে। তবে অধিকাংশ গাড়িগুলো অপশনের ক্রয় করার কাগজপত্রহীন ও ফিডনেসবিহীন লট গাড়ি। সেসব গাড়িকে গ্যারেজে মোডিফাই করে ছেড়ে দেওয়া হয় বান্দরবান-রাঙ্গামটি-কক্সবাজারসহ বিভিন্ন সড়কে। চালকদের অদক্ষ কারণে সড়ক গুলোতে দাপিয়ে বেড়াই সেসব অনিবন্ধিত ও ফিডনেস ছাড়া গাড়িগুলো। যার ফলে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় প্রান হারাতে হয় স্থানীয় কিংবা ঘুরতে আসা পর্যটকদের।

পরিবহন মালিকরা জানিয়েছেন, জেলায় প্রায় ৩৫০টি জিপ গাড়ি রুমা, থানচি, রোয়াংছড়িসহ বিভিন্ন উপজেলার পর্যটন স্পটে চলাচল করে। এগুলোর মধ্যে ৩০টি বি-সেভেন্টি ও ৩২০টি মাহেন্দ্র জিপ। জাপানের তৈরি বি-সেভেন্টি গাড়িগুলোতে ফোর হুইল থাকায় দুর্গম পাহাড়ি সড়কে সহজে যাতায়াত করতে পারে। মাহেন্দ্র জিপে ফোর হুইল নেই। সে কারণে উঁচু পাহাড়ি সড়কে এই জিপগুলো চলাচল করতে পারে না।

চালকরা জানিয়েছেন,যারা চালক রয়েছেন তাদের অধিকাংশ দক্ষ ও লাইসেন্স রয়েছে। তারা চাননা কোন কারণের দুর্ঘটনা হোক এবং চেষ্টাও করেন যাতে পর্যটকরা ভালোভাবে নির্দ্দিষ্ট স্থানে ফিরতে পারে। আবার অনেক চালক বলছেন- অপশনে গাড়িগুলো কিনলেও প্রশাসন কোন কাগজপত্র দেননা। যার কারণের থানার সাথে চুক্তি ও টোকেনের মাধ্যমে বিভিন্ন সড়কের গাড়ি চলাচল করা হয়। আবার কাগজপত্র না থাকাতে প্রায় সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিতে হয় টাকা। এসব ম্যানেজ করে বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে কিংবা উপজেলাসহ বাইরে জেলাতে চলাচলের সুযোগ হয়।

বনরুপা ও হাফেজঘোনা বাসিন্দা রবি, রমেশসহ বেশ কয়েকজন সাথে কথা হয়। তারা জানিয়েছেন, প্রতি মৌসুমে বান্দরবানে পর্যটকরা ঘুরতে আসেন আনন্দ করতে। কিন্তু সেসব আনন্দগুলো নিরানন্দন হয়ে যায়। এর কারণ অদক্ষ ও চালকেরা বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানো কারণে এসব দুর্ঘটনা হয়।যেটি বান্দরবানবাসী জন্য মোটেই কাম্য নয়। পর্যটকদের নিরাপত্তা স্বার্থে দুর্ঘটনা এড়াতে হলে পাহাড়ি সড়কের দক্ষ চালক ও উন্নতমানে গাড়ি ব্যবস্থা করে দেওয়া জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান।

বান্দরবান জীপ ও মাইক্রোবাস সমিতি সহ-সভাপতি – মো. রশিদ বলেন,সমিতি পক্ষ থেকে গাড়ি লাইসেন্স ও ফিডনেন্সসহ বৈধ কাগজপত্র দক্ষ চালকদের চলাচলে জন্য বলা দেওয়া হয়েছে। গাড়ির মালিক ও চালদের কাগজপত্র হালনাগাদ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জেলা জুড়ে পর্যটকদের নিয়ে বিভিন্ন স্থানে চলাচল করে তবে এসব ফিটনেস ও লাইসেন্স বিষয়ে কথা বলতে রাজি নয় বান্দরবানে বিআরটিএ সহাকারী পরিচালক আনোয়ার হোসেন ।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হোসাইন মো: রায়হান কাজেমী বলেন, ট্রাফিক বিভাগ বিভিন্ন পয়েন্টে দাঁড়িয়ে গাড়ি কাগজপত্র চেক করা হচ্ছে। তবে ফিডনেস ব্যাপারে দেখার দ্বায়িত্ব বিআরটিএ কর্তৃপক্ষদের। এবং বগালেকে যে দুর্ঘটনা ঘটেছে সেটি বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here