বিশেষ প্রতিনিধি||বান্দরবান || বান্দরবানের আবারো চাঁদাবাজিসহ নানান নাশকতার শুরু করেছে বিছিন্নবাদী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফ। রোয়াংছড়ি হতে
রুমা সড়কে যানচলাচলকারী কাছ থেকে প্রতিদিন চাঁদাবাজী করে আসছেন বলে অভিযোগও উঠেছে। যার ফলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে ওই সড়কের চলাচলের থাকা সাধারণ মানুষের মাঝে। এভাবে দিনের পরদিন নাশকতার শুরু হলে পাহাড়ের অশান্তি পরিবেশ সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন সাধারন মানুষ।
জানা গেছে, গেল ৫ নভেম্বর বান্দরবানে রুমায় মুনলাই পাড়া এলাকায় কমিনিটিউটি সেন্টারে কেএফএফ সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির
দুই ঘণ্টাব্যাপী সরাসরি বৈঠক হয়। পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির আহ্বায়ক ও বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈ হ্লার নেতৃত্বে ৮ সদস্য এবং কেএনএফের প্রতিষ্ঠাতা নাথান বমের প্রধান উপদেষ্টা লাল এন লিয়ান বমের নেতৃত্বে ৫ সদস্য বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে কেএনএফ সদস্যদের পাহাড়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার বিষয়ে বৈঠকে উভয়পক্ষের মধ্যে ছয়ট একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। এরপরে বিভিন্ন গ্রাম থেকে পালিয়ে যাওয়া দীর্ঘ আটমাস পরে নিজ বসতভিটায় ফিরে আসেন কয়েকটি সম্প্রদায়ের মানুষ। সমাঝোতা পর ফিরে আসে পাহাড়ের শান্তি। কিন্তু দুইমাস পর আবারো নাশকতার শুরু করেছে কুকিচীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কে এনএফ)।
অভিযোগ আছে, গেল ৮ জানুয়ারি বিকালে মোটর সাইকেলযোগে রোয়াংছড়ি হয়ে রুমা দিকে যাচ্ছিলেন ফারুক ও মো:শাহ আলম নামে দুই বন্ধু। বিকালে সোয়ানলু পাড়া বালু পাহাড় ব্রিজের উপর তাদেরকে আটকিয়ে কেএনএফ সদস্যরা চাদাঁ দাবী করে। এক প্রকারে না দিলে চাইলে ধারালো চুরি দিয়ে ভয় দেখিয়ে দুই হাজার টাকা লুটে নেন। এসময় তাদের কাছে ছিল ওয়াকিটকি। শুধু তাই নয় কেএনএফ সশস্ত্র গ্রুপ এলাকা বলেও হুমকি দেন তারা। পরে থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করেন দুই যুবক।
স্থানীয়রা জানান, কয়েকদিন ধরে রোয়াংছড়ি- রুমা সড়কে যানচলাচলের সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে আসছিলেন কেএনএফ সদস্যরা। সে সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে প্রতি গাড়ি( মোটর সাইকেল) কিংবা ট্রাক ছাড়াও অনান্য যানবাহনের প্রতি গাড়ি থেকে ২ হাজার কখনো ৫ হাজার চাঁদা তুলে আসছিল। এছাড়াও কয়েকদিন আগে ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা দুই পর্যটক কাছ থেকে নগদ টাকা ও মারধরে ঘটনায় শিকার হতে হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা মান আবারো থমকে যাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সমস্যা সম্মুক্ষীন হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। পাইক্ষ্যং মৌজার হেডম্যান বৈথাং বম বলেন,শান্তি প্রতিষ্ঠা সাথে আলোচনা পর সেনাবাহিনী সহযোগীতায় আট্মাস পর গ্রামে ফিরতে পেরেছি। কিন্তু এখন যে চাঁদা দাবীসহ যেসবনঅনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটছে এভাবে হলে স্থানীয়দের মাঝে অনেক সমস্যা সম্মুক্ষীন হতে হবে। আমরা চাই শান্তিভাবে পাহাড়ের বসবাস করতে।
সুয়ানলু পাড়া বাসিন্দা লালচুম বম বলেন,বালু পাহাড়ের যা দেখলাম সেটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা যা আমরা কল্পনা করতে পারি নাই এভাবে হবে। এবং এটি অত্যান্ত দুঃখজনক। এই ঘটনা বিচ্ছিন্নবাদী বাদী ছাড়া কেউ নয়। আমরা চাই সমঝোতা করে আগের মতন পাহাড়ের শান্তি ফিরে আসুক।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রোয়াংছড়ি- রুমা সড়কের তিনকিলোস্থানে নাম বালু পাহাড়। সে পাহাড়ের উপর ৭টি মাটি গর্ত করে তৈরী করা হয়েছে বাঙ্কার । গর্তে স্থানীয়দের তৈরী কম্বল ও সেখানে পড়েছিল একটি কার্তুজের আলামত গুলি। প্রায় ২৫ফুটের উপর পাহাড় থেকে দেখা যায় উভয় দিকে যাতায়াতের সড়ক। সড়কের নীচে দাঁড়িয়ে চাঁদা তুলে আসছিল কেএনএফ বাহিনী। তাছাড়া সেনাবাহিনীদের উপর আক্রমণ করার পরিকল্পনা করেছিল কে এনএফের সদস্যারা। পরে খবর পেয়ে কে এনএফের অস্থায়ী ক্যাম্পের অভিযান চালায় সেনাবাহিনী। দূর থেকে উপস্থিতির টের পেয়ে ক্যাম্প ছেড়ে পালিয়ে যান কেএনএফের সদস্যরা। এর আগে চাঁদা তোলা অভিযোগের কেএনএফ বিরুদ্ধের থানায় একটি অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীরা।
রোয়াছড়ি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) পারভেজ আলী বলেন,রোয়াংছড়ি- রুমা সড়কের বালু পাহাড় এলাকায় সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করা অভিযোগ পেয়েছি। এরই মধ্যে এই বিষয়টি নিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে কে বা কোন গোষ্ঠির সংগঠনে কাজ কীনা। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।