।।প্রতিনিধি থানচি।।
বান্দরবানে থানচিতে সাঙ্গু নদী থেকে অবৈধভাবে মেশিন বসিয়ে হাজার হাজার ঘনফুট বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালী একটি চক্র। বালু খেকোদের দখলে সাঙ্গু নদীচর, কোনোরকম সরকারি ইজারা ছাড়াই বালুখেকোরা প্রকৃতি ও পরিবেশের ক্ষতি করে চলছে অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোৎসব।
সাঙ্গু নদী থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার ঘনফুট বালু ট্রাক যোগে বিক্রির উদ্দেশ্যে পাচার করা হচ্ছে। এতে করে লাভবান হচ্ছেন বালু খেকোরা আর ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদী তীরের ফসলি জমিগুলো। থানচি উপজেলায় বলিপাড়া ইউনিয়নের কনজৈ পাড়া এলাকায় অক-থাইক্ষ্যং নামক স্থানে সাঙ্গু নদী তীরে চরে অবৈধভাবে মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন প্রভাবশালী চক্র হওয়ায় অসহায় এলাকাবাসী। ফলে কোনোভাবেই সাঙ্গু নদী থেকে বালু উত্তোলন ও বিক্রি বন্ধ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন- স্থানীয় বাসিন্দারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বলিপাড়া ইউনিয়নের কনজৈ পাড়া পার্শ্ববর্তী অক-থাইংক্ষ্যং এলাকায় সাঙ্গু নদী থেকে অবৈধভাবে মেশিনে মাধ্যমে বালু উত্তোলন করছে বালুখেকোরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বলিপাড়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড কনজৈ পাড়া পার্শ্ববর্তী থাইংক্ষ্যং মুখ এলাকায় সাঙ্গু নদী থেকে ২৪হর্স ক্ষমতা সম্পন্ন মেশিনে ১০ ইঞ্চি পাইপ যুক্ত করে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। হাজার হাজার ঘন ফুটের ২টি বালুস্তুপ করা হয়েছে। কনজৈ পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘেঁষে গাড়ি রাস্তা করে বালু বিক্রি কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। যা বর্ষা মৌসুমে স্কুলে অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কনজৈ পাড়া বাসিন্দা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বার বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত। তাদের অধীনে ৪ জন শ্রমিক মেশিনে সাহায্যে বালু উত্তোলনের কাজ করছে। দিনভর বিরতিহীনভাবে বালু উত্তোলন করেন শ্রমিকরা। সন্ধ্যায় কিংবা রাতে আন্ধারে উত্তোলিত শত শত ঘন ফুট বালু ট্রাকের ভর্তি করে বিক্রির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন স্থানের নিয়ে যাওয়ার হয়।
বালু উত্তোনের ব্যাপারে জমির মালিক আপ্রুসে মারমা বলেন, সাঙ্গু নদী হতে এই বালু উত্তোলনকারীদের নাম ও পরিচয় বলা যাবেনা, কারন তারা এই এলাকার জনপ্রতিনিধি চেয়ারম্যান ও মেম্বার। তারা সাঙ্গু নদীর হতে বালু উত্তোলনের আগে আমার জমির ব্যবহার করার অনুমতি চাইতে আসে।
তিনি বলেন, বালু ব্যবসায়ীরা আমার জমির ব্যবহার করা অনুমতি দিতে অস্বীকার করলে, বিনিময়ের কিছু টাকা পয়সা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এক প্রকার জোর করে আমার জমির উপর তারা বালু স্তূপ বসিয়ে দেয়। এখন তারা টাকা পয়সাও দিচ্ছে না, আমার জমির ও খালি করে দিচ্ছে না। আমি চাষাবাদ করতেও পারছিনা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন জানান, বালু উত্তোলন করা নিষিদ্ধ। যদি কেউ বিক্রি উদ্দেশ্যে বালু উত্তোলণ করে থাকে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।