উধাও ঠিকাদার; আগাইনি কোটি টাকার কাজের গতি, ভোগান্তিতে স্থানীয়রা

0
27

বান্দরবান প্রতিনিধি।।

বান্দরবান আলীকদমে কোটি টাকা সড়কের কাজ না করে পালিয়ে গেছেন মের্সাস রাজু কনস্ট্রাকশন স্বত্বাধিকারী ও আওয়ামী লীগের ঠিকাদার রাজু বড়ুয়া। ফলে সড়কের ধীরগতিতে কাজ করায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে স্থানীয়দের। তাছাড়া প্রকল্পের কাজের মেয়াদ শেষ হয়েও কাজ না করে খামখেয়ালী ভাবে ফেলে রাখার অভিযোগ আছে ঠিকাদার বিরুদ্ধে। যার কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে দেখা দিয়ে চরম ক্ষোভ। পালিয়ে যাওয়া ঠিকাদার পরিবর্তন করে নতুন ঠিকাদাদের নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

খোজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরে দুর্যোগ অধীনের ও আম্পানের পল্লী সড়ক আওতাধীন কোটি টাকা ব্যায়ের প্রকল্প পেয়েছিলেন আওয়ামী লীগের ঠিকাদার রাজু বড়ুয়া। যার বরাদ্ধের সড়কের কাজ শেষ হওয়ার কথা চলতি বছরে সেপ্টেম্বর মাসে। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলেও এখনো শেষ হয়নি সড়কের কাজ। শুরুতেই যেভাবে কাজ শুরু করেছিল দীর্ঘ মাস পার হলেও সেভাবে পড়ে আছে সড়ক। এক শতাংশ আগেনি কাজের কোন গতি। এতে ওই সড়কের চলাচলকারীদের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম দুর্ভোগ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, শুরুতেই কাজ চলমান থাকলেও পরবর্তীতে কাজ করে বন্ধ হয়ে যায়। এরপর মাসে পর মাস গেলেও গতি বাড়েনি কাজের মান। কাজে ধীর গতি ও ঠিকাদার পালিয়ে যাবার কারণে সড়কের চলাচলকারীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। রিটার্নিং ওয়াল ও কালভার্ট শুরু করলেও সড়কের কাজ এখনো ধরেনি। বারবার সংশ্লিষ্টদের বলা হলেও পরবর্তীতে নেইনি কোন পদক্ষেপ। সরকার পতনের আগে আ.লীগ ঠিকাদার কাজ করলেও পরবর্তীতে পালিয়ে যাওয়াতেই এখন পুরো সড়ক বেহাল দশা। কাজের মান গতি বাড়াতে অনান্য ঠিকাদার নিয়োগের দাবি জানান স্থানীয় বসবাসকারীরা।

উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) তথ্যনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও বন্যা ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক অবকাঠামো পূর্ণবাসন শীর্ষক প্রকল্পের অধীনের থানচি রোড হতে উওর পালং পাড়া পর্যন্ত ১ কিলো ২৭৭ মিটার কার্পেটিং সড়ক প্রকল্পের বরাদ্ধ দেয়া হয় ১কোটি ৭১ লক্ষ টাকা। যা শেষ হওয়ার কথা ছিল গেল সেপ্টেম্বর মাসে। কিন্তু নির্দিষ্ট তারিখে শেষ হয়নি প্রকল্পের কাজ। বরংচ নানা আজুহাতে দেখিয়ে আরো দুই মাস বাড়ানো হয়েছে কাজের মেয়াদ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আলীকদম পানবাজার মুখ থেকে উত্তর পালং পাড়া পর্যন্ত সড়কের প্রায় ১ কিলো ২৭৭ মিটার সড়ক। ওই সড়কের কাজ করার জন্য পুরানো কার্পেটিং তুলে সড়কের পাশে স্তুপ করে রাখা হয়েছে। । পুরো ১ কিলোমিটার সড়কের এখনো শুরু করেনি বক্স কাটা। সড়ক ভাঙ্গনের রিটার্নিং ওয়াল ও গার্ডার ব্রিকের কাজ শুরু হলেও সড়কের কাজ যেমন তেমনভাবে এখনো পড়ে আছে সড়কের পাশে রিটার্নিং ওয়াল ও গার্ডার ব্রিজ কাজে শ্রমিক থাকলেও ধীর গতিতে কাজ চলছে। তবে ঠিকাদার পালিয়ে যাবার পর থেকে আর কোনক্রমেই আগাইনি সড়কটি কাজ। ফলে সেই সড়কের দ্রুত সংস্কার চান স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্থানীয় বাসিন্দা কমল তংচঙ্গ্যা ও টমটম চালক করিম মোল্লা বলেন, এই সড়কে শুরু কাজ করলেও এখন বন্ধ হয়ে গেছে। সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার মানুষ চলাচল করে। এখন সড়কের কার্পেটিং তোলার পর আরো অবস্থা খারাপ। ঠিকাদার পালিয়ে গেছে বলে এই দুর্ভোগ দেখতে হচ্ছে। আমরা চাই নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে সড়ক্টি দ্রুত কাজ করা হোক।

সদর ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন বলেন, চার মাস ধরে কাজ বন্ধ আছে আর কাজ করলেও ধীরগতিতে চলছে। এতে স্থানীয়রা যারা চলাচল করছে সকলেই ভোগান্তি মধ্যে আছে। যে কাজ পাচদিনে শেষ হওয়ার কথা কাজ শেষ হচ্ছে ২০ দিনে। আমরা চাই ঠিকাদার পরিবর্তন করে দ্রুত কাজ শেষ করা হোক।

এই বিষয়ের ঠিকাদার মেসার্স রাজু কনস্ট্রাকশন স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার রাজু বড়ুয়া সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঠিকাদার পালিয়ে যাওয়াতেই সড়কের কাজটি বন্ধ হয়ে গেছে। আর ঠিকাদার দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য আরো তিনমাস সময় চেয়ে আবেদন করেছে।

বান্দরবান এলজিইডি সহকারী প্রকৌশলী পারভেজ সরোয়ার হোসেন বলেন, যেহেতু বিভিন্ন সাইটে রোলার কাজে আছে তাই ধীরগতি হচ্ছে। রোলার দেয়ার পর কাজের গতি আগাবে বলে আশা করছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here