পালিয়ে আসা বিজিপি ১শত সদস্যকে টেকনাফে স্থানান্তর

0
63

আকাশ মারমা মংসিং।। বান্দরবান।।

গেল কয়েককদিন ধরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরের বিদ্রোহী গোষ্ঠির আরাকান আর্মি ও মিয়ানমারের সেনাবাহিনী মাঝে তুমুলভাবে গোলাগুলি চলচ্ছিল। গত দুদিন ধরে সে দুপক্ষে গুলাগুলি এখন থেমেছে। বান্দরবানের ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। গতকাল থেকে আজ পর্যন্ত কোন সীমান্তবর্তী এলাকায় গোলাগুলি কিংবা মর্টারশেলের কোন শব্দ শোনা যায়নি ঘটনা ঘটেনি। যার ফলে স্থানীয়দের মাঝে কিছুটা স্বস্তির ফিরলেও এখনো আতঙ্ক কাটেনি জনমনে।

গেল কয়েকদিন আগে বিদ্রোহী গোষ্ঠির আরাকান আর্মি ও মিয়ানমারের সেনাবাহিনী মাঝে ব্যাপক সংঘর্ষকালে প্রাণ বাঁচাতে মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী রক্ষাকারী বিজিপির বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে। এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশে অভ্যন্তরে আশ্রয় নিয়েছেন মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী রক্ষাকারী বিজিপির সদস্য ৩৩০জন। পালিয়ে আসা বিজিপির সদস্যদের নিরস্ত্রীকরণ করে খাবার ও আশ্রয় দেন বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড বিজিবি।

এদিকে আজ দুপুর বেলা সাড়ে তিনটায় আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষাকারী বাহিনী একশত জন বিজিপির সদস্যকে প্রশাসনিক সুবিধা বিবোচনা করে তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে টেকনাফের হ্নীলাতে স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে এখনো ঘুমধুম উচ্চ বিদদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষাকারী বাহিনীদের এখনো স্থানান্তর করা হয়নি।

অপরদিকে সীমান্ত পরিস্থিতি শান্ত হয়ে উঠায় উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া ঘুমধুম-তুমব্রু, জলপাইতলী সীমান্তের ২৪৩ জন বাসিন্দার গতকাল ঘরে ফিরেছেন। তবে সীমান্তবর্তী বাসিন্দাদের মাঝে এখনক আতঙ্কের ভর কাটেনি।এই ঘটনায় আহত হয়েছে অন্তত ছয়জনের ও নিহত হয়েছে দুইজন।

স্থানীয়রা জানান, গত তিনদিন ধরে সীমান্ত থেকে কোন গোলাগুলি শন্দ শোনেননি। সীমান্ত পরিস্থিতি অবনতির হওয়ার পর সবাই বাসায় ফিরেছেন। বাজারগুলোতে বেড়েছে সাধারণ মানুষের আনাগোনা। দোকানপাট গুলো খুলতে শুরু করেছে। কিছুটা স্বস্তির ফিরলেও এখনো আতঙ্কে রয়েছে সীমান্ত বাসিন্দারা।

তুমব্রু এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিন আগে যে গোলাগুলি শুরু হয়েছিল ভয়ে সবাই পালিয়ে গেছে। এখন পরিস্থিতি অবনতির হওয়ার পর সবাই বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে।

ঘুমধুম বাসিন্দা জহির বলেন, সীমান্তে গোলাগুলি কারণে চাষবাস কিছুই করতে পারেনি। সবকিছু ছেড়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে আত্বীয় বাসায় আশ্রয় নিয়েছি। এখন স্বাভাবিক হওয়াতেই স্বস্তিতে ফিরেছে।

ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, বুধবার দুপুরের পর থেকে আজকে সকাল পর্যন্ত কোনো গুলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। পরিস্থিতি শান্ত হয়ে উঠায় আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া লোকজন ঘরে ফিরে গেছে।

তিনি বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে উঠায় ভয়ে ও আতঙ্কে দূরদূরান্তে আত্মীয় স্বজনের বাসাবাড়িতে চলে যাওয়া লোকজনও ফিরতে শুরু করেছে। সীমান্তবর্তী তুমব্রু বাজারে দোকানপাট খুলেছে ব্যবসায়ীরা। বাজারগুলোতে লোকজনের আনাগোনাও বেড়েছে।

বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজ দুপুরে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষাকারী বিজিপির একশত জন সদস্যকে টেকনাফ দিকে স্থানান্তর করা হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here