
সুশান্ত কান্তি তঞ্চঙ্গ্যাঁ, আলীকদম:
বান্দরবানের সীমান্ত উপজেলা আলীকদমের একমাত্র সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়টি দীর্ঘদিন ধরে চরম শিক্ষক সংকটে ভুগছে। শিক্ষক সংকটের কারণে বিপাকে শিক্ষার্থীরা,অভিভাবকদের ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক না থাকায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাস পাচ্ছে না,ফলে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান কার্যক্রম। এসএসসি পরীক্ষাও আশা অনুরূপ ফলাফল মেলেনি এ বিদ্যালয়ে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, আলীকদম সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৪৫০জন ছাত্র/ছাত্রী হলেও অনুমোদিত শিক্ষক পদের অর্ধেকেরও বেশি শূন্য রয়েছে। ১৩ পদের পরিবর্তে ৬জন শিক্ষক আছে। বর্তমানে যে কয়জন শিক্ষক রয়েছেন,তারা অতিরিক্ত চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন। এতে গণিত,ইংরেজি ও বিজ্ঞানসহ কমার্স সাবজেক্ট এর উপর কোন শিক্ষক নেই। এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে নিয়মিত ক্লাস নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
বিদ্যালয়ের পড়ুয়া নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সায়েদ মোহাম্মদ আইমন,অর্পিতা দাশ,সুম্মিতা দে জানান, শিক্ষক না থাকায় শ্রেণীর নির্দিষ্ট ক্লাস গুলো নিয়মিত হয় না। এতে পরীক্ষার প্রস্তুতিতেও তারা পিছিয়ে পড়ছে। তারা আরও বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে বিগত এসএসসি পরীক্ষায় আশা অনুরূপ ফলাফল না হওয়ার একমাত্র কারণ হল শিক্ষক সংকট।
শিক্ষার্থীর অভিভাবক মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা সন্তানদের মানসম্মত শিক্ষা দেওয়ার জন্য সরকারী বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছি, কিন্তু শিক্ষক না থাকায় তারা কাঙ্ক্ষিত শিক্ষা পাচ্ছে না। এছাড়াও শিক্ষার্থী ও সচেতন মহল দ্রুত শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়ে বলেন, শিক্ষক সংকট নিরসন না হলে আলীকদমের সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শিক্ষার মূলধারায় পিছিয়ে পড়বে।
আলীকদম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ আবু তাহের বলেন, এ বিদ্যালয়ে বিশেষ করে বিষয় ভিত্তিক শিক্ষক কর্মাসের সাবজেক্ট গুলোর শিক্ষক ও ধর্মীয় শিক্ষক নাই। যে গ্রুপ সাবজেক্ট গুলো আছে এগুলো ক্লাস নিতে আমাদের সমস্যা হয়।আমাদের ২ টা আইসিটি ল্যাব আছে তাও শিক্ষক নেই। এ সমস্যার কারণে আমরা বিগত ৩ বছর এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল বিপর্যয় হয়েছে বলে জানান তিনি।
আীকদম সরকারি প্রাথমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক সংকট রয়েছে। সারা বছর এ ৬ জন শিক্ষক দিয়ে ক্লাস পরিচালনা করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। ৩ বছর ধরে এখানে ৩ ও ৪র্থ শ্রেণির কোন কর্মচারী নাই। অফিসে কাজ কর্ম করতেও ব্যাহত হচ্ছে। আমাদের বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষায় আশা অনুরূপ (A+) ও ভালো রেজাল্ট না হওয়ার কারণ হল শিক্ষক সংকট। আমি শিক্ষা অধিদপ্তরের কাছে শিক্ষক নিয়োগের জন্য একাধিকবার আবেদন জানিয়েছি। তবে এখনও সমস্যার সমাধান হয়নি।”
আলীকদম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনজুর আলম বলেন,আলীকদম উপজেলার একমাত্র সরকারি হাইস্কুল এইটা। এ বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট, জনবল সংকট আছে এইটা আমাকে জানানো হয়েছে। এখানে দীর্ঘদিন ধরে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার না থাকা,পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকার কারণে এবারের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল আশা ব্যঞ্জক হয়নি।বিষয় ভিত্তিক শিক্ষক যেভাবে থাকার কথা সেভাবে নাই,ফলে পাঠদান কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। গতকাল নতুন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার যোগদান করেছেন, তার সাথে কথা বলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে দ্রুত শিক্ষক সংকট নিরসন করা হবে বলে জানান।





