।।সুশান্ত কান্তি তঞ্চঙ্গ্যাঁ, আলীকদম।।
বান্দরবানের আলীকদমে মারাইংতংয়ে বেড়াতে আসা মোঃ ইফতেখারুল আহমেদ আবিদ (২০) এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (২১ জুন) দিবাগত রাতে আলীকদমে মারাইংতং পাহাড়ের চূড়ায় এ ঘটনাটি ঘটে।
নিহত যুবক টাঙ্গাইলে কালিহাতি উপজেলার গান্ধিনা গ্রামের মোঃ হেলাল উদ্দিনের ছেলে মোঃ ইফতেখারুল আহমেদ আবিদ। বর্তমানে সে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্র বলে জানা যায়।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল বগুড়া মেডিক্যাল কলেজ থেকে ১২ জন পর্যটক টুরিস্টের ১টিম মারাইংতং জেদী পাহাড়ের ভ্রমণের উদ্দেশ্যে আলীকদমে আসেন। আবাসিক এলাকার ট্যুর অপারেটর ইয়াছিন ভাই হোটেলের মালিক ইয়াসিনের মাধ্যমে ১২ জন পর্যটক শুক্রবার বিকালে মারাইংতং জেদী পাহাড়ে উঠে। সেখানে রাতে তারা টেন্ট ক্যাম্পিং করেন। হঠাৎ রাত সাড়ে ১২ টায় তাদের মধ্যে ইফতে খাইরুল আহম্মেদ আবিদের খিছুনি উঠে। পরে পার্শ্ববর্তী লামা হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অভিযোগ আছে, মারাইংতং জেদী পাহাড়ে রাত্রিযাপন করতে পর্যটকদের প্রয়োজন তথ্য এন্ট্রি করা ও সাথে নিয়ে যেতে পর্যটক গাইড। নিয়ম অনুযায়ী ট্যুর গাইডের সদস্য ব্যতিত পর্যটক নিয়ে আলীকদমের কোথাও যাতায়াত করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ রয়েছে ।কিন্তু সেটি কোন কিছুই না মেনে অপারেটর ইয়াছিন আরাফাতের তত্ত্বাবধানে ১২জনের পর্যটকদের নিয়ে মারাইংতং পাহাড়ে যায় এবং রাত্রি যাপন করে তারা। এর আগেও ইয়াছিন আরাফাত কোন তথ্য না দিয়ে এভাবে টাকা লোভে পর্যটকদের নিয়ে বলে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে ।
আলীকদম ট্যুর গাইড এসোসিয়েসনের সাধারণ সম্পাদক জানান, উপজেলা প্রশাসনের আওতাধীন পর্যটন সেবা তথ্যকেন্দ্রে কোনো প্রকার তথ্য এন্ট্রি করে না পর্যটকদের নিয়ে যাওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তাছাড়া আবাসিক এলাকার ইয়াছিন ট্যুর গাইডের সদস্য নন।
আবাসিক এলাকার ট্যুর গাইড অপারেটর মোঃ ইয়াসিন আরাফাতের কাছে পর্যটকদের ডাটা এন্টি না করার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই এলাকার পর্যটক ব্যবসায়ীরা কেউ ডাটা এন্টি করে না। আমি একা নয় সবাই যে যার মত ট্যুরিস্টি/পর্যটক নিয়ে মারাইংতং পাহাড়ে ব্যবসায় পরিচালনা করছে,তাই আমিও করছি।
মৃত নাহিদের বন্ধু নাফিজ,হাসান ও আবিদ বলেন, টাঙ্গাইলের কালিহাতি থেকে ১২ জন বন্ধু বেড়াতে এসেছি। এখানে এসে পর্যটক গাইড মোহাম্মদ ইয়াছিন তত্ত্বাবধানে আলীকদমের মারাইতং পাহাড়ে ক্যাম্পিং করেন। সব কিছু ভালোই ছিল, হঠাৎ রাতে ইফতে খাইরুল আহম্মেদ আবিদের খিছুনি উঠে। পার্শ্ববর্তী লামা হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাক্তার জুনাইয়েদ বলেন, গত রাত দেড়টার দিকে আবিদ নামে এক পর্যটককে হাসপাতালে পৌছার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। মৃত পর্যটক নেশাগ্রস্ত ছিলো কিনা এই বিষয়টি আমি নিশ্চিত নই।
লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ শামীম শেখ পর্যটক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তার শ্বাস কষ্ট ছিলো বলে আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। এখন তার লাশ লাশবাহী এ্যাম্বুলেন্সে করে থানায় রাখা হয়েছে। তার পরিবারকে খবর দেয়া হয়েছে। তার বন্ধুরা সবাই আছে।
তিনি আরো বলেন,রোদের মধ্যে সারাদিন দুর্গম পাহাড়-ঝর্ণায় বেড়ানোর কারণে শরীর দুর্বল হয়ে অসুস্থ ও এক পর্যায়ে আবিদের মৃত্যু হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।পরিবারের লোকজন পৌঁছালে তার মরদেহ আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে জানান।