খাগড়াছড়িতে ক্লুলেস চাঞ্চল্যকর হত্যার মামলায় আসামি গ্রেফতার

0
79

দহেন বিকাশ ত্রিপুরা।।খাগড়াছড়ি।।

খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় এক হত্যা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে চঞ্চল্যকর ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন ও এই ঘটনার সাথে জড়িত প্রধান (হত্যা ও চাঁদাবাজি) আসামিকে গ্রেফতার করেছে খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ।

আজ রোববার (৪ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানান খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মুক্তা ধর, পিপিএম (বার)।

তিনি তার লিখিত বক্তব্যে আরো জানান, গত বছরের ১১ নভেম্বর  সুজন্ত ত্রিপুরা সুজন নামে ২৪ বছরের এক যুবককে হত্যা করে আনুমানিক দুপুর ৩টার দিকে খাগড়াছড়ি পৌরসভার স্বপ্ন মোহন কারবারী এলাকার তিন রাস্তার মোড়ে ফেলে যায় অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা।

এই ঘটনায় ভিকটিমের স্ত্রী বাদী হয়ে খাগড়াছড়ি সদর মডেল থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। পরবর্তীতে মামলাটি অতীব গুরুত্ব বিবেচনায় পুলিশ সুপার হত্যা মামলার রহস্য উম্মোচন ও ঘাতকদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে সদর থানার অফিসারদের সমন্বয়ে একটি চৌকস টিম গঠন করা হয়।
হত্যা মামলাটি গভীর ও নিবিড় ভাবে তদন্ত করে রহস্য উম্মোচনের জন্য সার্বিক দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। পরে এই মামলার প্রায় দুই মাস অধিক সময় তদন্ত করার পরে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ধৃত ওই আসামি সুজন হত্যার বর্ণনা দেয় পুলিশের কাছে।

পুলিশের একটি চৌকশ দল তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে আজ রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে আসামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত আসামী প্রাথমিক জিঙ্গাসাবাদে রাপ্রু মারমা ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ স্বীকার করেছে বলে জানায় পুলিশ।

খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় ক্লুলেস চাঞ্চল্যকর হত্যার মামলায় আসামি গ্রেফতার। ছবি: রুমা বার্তা
খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় ক্লুলেস চাঞ্চল্যকর হত্যার মামলায় আসামি গ্রেফতার বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং।  ছবি: রুমা বার্তা

খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মুক্তা ধর সংবাদ সম্মেলনে জানান, মূলতঃ ভিকটিম সুজন্ত ত্রিপুরা সুজন (২৪) ও ধৃত আসামী রাপ্রু মারমা (৩২) দুজনে অটোচালক। তারা উভয়ে মাদকসেবী হিসেবে তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। ভিকটিম সুজন্ত ত্রিপুরা সুজন (২৪) নারী কেলেঙ্কারীতে আসক্তি ছিলো বলে জানা যায়। হত্যাকান্ডের বেশ কিছুদিন পূর্বে তাদের মধ্যে বাজারে অটো ইজিবাইকের সিরিয়াল/লাইন নিয়ে বাকবিতন্ডা মারামারির ঘটনা ঘটে। এরই ধারাবাহিকতায় উক্ত বিবাদের কারণে ধৃত আসামী রাপ্রু মারমা (৩২) সঙ্গীয় একজন সঙ্গে নিয়ে ভিকটিম সুজন্ত ত্রিপুরা সুজন (২৪) হত্যাকান্ডের কয়েকদিন আগে কমলছড়ি ইউনিয়নের যাদুরাম পাড়ায় তাকে একা পেয়ে আক্রমণ করে। এ ঘটনায় উভয়ে আহত হয়। এক পর্যায়ে ধৃত আসামী রাপ্রু মারমা (৩২) ভিকটিম সুজন্ত ত্রিপুরা সুজন (২৪) কে হত্যার হুমকি দেয়। ধৃত আসামী রাপ্রু মারমাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ভিকটিম সুজন্ত ত্রিপুরা সুজন (২৪) তার স্ত্রী গর্ভবতী হওয়ার পর থেকে ধৃত আসামীর স্ত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করে বলেও জানা যায়।

তিনি আরো জানান, খুনী রাপ্রু মারমা (৩২) ভিকটিমের পরিবারের সাথে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে আপোষ মিমাংসার চেষ্টা চালায়। খুন ঘটনার আপোষের বিষয়ে আসামী ভিকটিম সুজনের স্ত্রী তথা মামলার মামলার অন্তসত্তা বাদীনিকে পনেরো হাজার টাকা ও পরবর্তীতে ভরণপোষনসহ পারিবারিক খরচের জন্য মাসিক হিসেবে টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেছে আসামী। আসামীকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) এসপি পদোন্নতিপ্রাপ্ত মাহমুদা বেগম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম ও অপস্) মোঃ জসীম উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ তফিকুল আলম, খাগড়াছড়ি সদর মডেল থানা ওসি মোঃ তানভীর হাসান, ডিবির ওসি মোঃ সামসুজ্জামান সহ তদন্তকারী চৌকস টিম।

উল্লেখ্য, আসামীর বিরুদ্ধে এর আগেও খাগড়াছড়ি সদর থানায় কয়েকটি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here