আগে চাই শিক্ষকদের বিদ্যালয়ে উপস্থিতি তারপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা ও ব্যবস্থাপনার কৌশলপত্র ‎

0
79

‎সুশান্ত কান্তি তঞ্চঙ্গ্যাঁ, ‎আলীকদম:

‎বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষা মোটেই ভাল নেই। একে একে ঝরে পড়ছে শিক্ষার্থীরা ভেঙ্গে যাচ্ছে প্রজন্ম। এক সময় যেখানে দৃষ্টান্ত দেওয়া মত প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল চম্পটপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আলীকদম আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,রোয়াম্ভু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এই প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো কেন হারিয়ে ফেলল সুনাম আর খ্যাতি। এখন প্রশ্ন হল এ দায়ভার কার?

‎বর্তমানে আলীকদম উপজেলায় ৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ৫৯৮৮ জন। অথচ এ সময় পরিমাণ শিক্ষার্থী বিভিন্ন নূরানী মাদ্রাসা ও কেজি স্কুলে পড়ালেখা করতেছে। দিন দিন অভিভাবকরা প্রাথমিক শিক্ষার প্রতি আস্থা রাখতে পারছেন না। আর এ উদ্বেগজনক হলো প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরিরত শিক্ষকদের ছেলে মেয়েদের কে নিজের স্কুল না পড়িয়ে বেসরকারি কেজি স্কুলে পড়াচ্ছেন। এ বাস্তবতা কি আমাদের জন্য লজ্জা নয় । যদি প্রশ্ন করা হয় বর্তমানে আলীকদম উপজেলায় ভালো পড়ালেখা চলে এমন প্রাথমিক বিদ্যালয় কোনটি তখন উত্তর আসবে না।

‎কিন্তুদিন আগে বিভিন্ন পত্রিকায় ও টেলিভিশনে শিরোনাম হল অধিকাংশ স্কুল বন্ধ থাকে। এমনং সংবাদ শতভাগ সত্যি না হলেও সংবাদটির অর্ধেক অংশ সঠিক। তবে ভৌগোলিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সাথে আমাদের কে তুলনা করলে ভুল হবে। তবে পার্বত্য চট্টগ্রাম একটি সীমাবদ্ধতা আছে। যোগাযোগের সমস্যার কারণে অনেক ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সুচারুভাবে কাজ করতে সক্ষম নয়। সুতরাং এটা আমাদের এলাকাভিত্তিক সমস্যা। এর সমাধান আমাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে। শিক্ষা খাতের এই অবনতির জন্য মূল সমস্যা গুলো চিহ্নিত করে শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য সামাজিক ভাবে একটি জাগরণ দরকার যেখানে বিভিন্ন শ্রেণির পেশাজীবী অভিভাবক, শিক্ষক, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি নিয়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। দায়িত্ব নিতে হবে যার যার অবস্থান থেকে তাহলে সম্ভব এ সমস্যার থেকে উত্তরণ হওয়ার।

‎ব্যবস্থাপনার কৌশলপত্রঃ-

‎১. যেহেতু এটা অঞ্চল ভিত্তিক সমস্যা,তাই সমাধানও এঅঞ্চলের মানুষের মাধ্যমে করতে হবে।
‎২. শিক্ষাখাতে সুন্দর পরিবেশ আনতে দিনব্যাপী কর্মশালা ও আলোচনার সভার আয়োজন করতে হবে।
‎৩. এই উপজেলার বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের  অংশগ্রহণ করাতে হবে।
‎৪. শিক্ষক এবং জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
‎৫. শিক্ষকবৃন্দ কেন স্কুলে যাননা তা চিহ্নিত করে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
‎৬. বিদ্যালয় এলাকায় থাকা এবং খাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
‎৭. লিঙ্গ বৈষম্য দেখা যাবে না।
‎৮. অপারক শিক্ষকদের সেচ্চায় অবসর গ্রহণ।
‎৯. সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
‎১০.প্রশাসন কর্তৃক অনলাইন মনিটর জোরদার করতে হবে এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে দিতে হবে।
‎১১.প্রতিদিন অনলাইনে তথ্য আদান প্রদান ও মনিটরিং এবং তথ্য অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
‎১২.সমস্যায় পতিত শিক্ষকদের মতামত গ্রহণ।
‎১৩.কর্মশালায় পেশাভিত্তিক গ্রুপ করা। গ্রহণকৃত মতামত দলীয়ভাবে উপস্থাপন করা।
‎১৪.সকল গ্রুপের মতামত শেষে সর্বজন গ্রহণযোগ্য মতামত সমূহ বাস্তবায়ন করা।

‎লেখক মোঃনুরুল আবছার
‎প্রধান শিক্ষক
‎মংচিং হেডম্যান পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here