সুজন কুমার তঞ্চঙ্গ্যা।।বিলাইছড়ি।।
রাঙ্গামাটি বিলাইছড়ি উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা রংতুলির আঁচরে সাজিয়ে দিচ্ছে দেয়াল। বিলাইছড়ি পল্টন ঘাট এলাকা এবং উপজেলা বাসভবন দেয়ালসহ বিভিন্ন এলাকার দেয়াল প্রাচীরের দিকে একবার তাকালে আর দ্বিতীয়বার ফিরে তাকাতেন না পথচারীরা। কারণ আস্তর খসে পড়া প্রাচীরে ছিল বিভিন্ন দলের জাতীয় ও স্থানীয় নেতাদের পোস্টার। তবে এখন এর চেহারা বদলে গেছে। পথচারীরা দাঁড়িয়ে তুলছেন ছবিও। কারণ দেয়ালের বিভিন্ন অংশ ভরে যাচ্ছে দৃষ্টিনন্দন সব গ্রাফিতিতে। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের আঁকা এসব দেয়ালচিত্রে মুগ্ধ সবাই।তারা লিখেছেন আমার ভূমি আমার মা, কেড়ে নিতে দিব না,বন্ধু চল পাহাড়ে দু:খ দেখাই তোমারে, বনফুল ফুটঁতেই থাকুক জুম পাহাড়ের বুকে,আদিবাসী নারীদের ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা,পাহাড়ে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা করা, রাষ্ট্রের মেরামত বা সংস্কার করা,মাতৃভাষার মাধ্যমে পাঠদান,ইত্যাদি ইত্যাদি।
সোমবার (২৬ আগস্ট) বেশ কয়েক দিন পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন দেয়ালে আঁকা শুরু করেছে এ সব ছবি। স্থান পেয়েছে কোটা আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদ, মুগ্ধ ছাড়াও তুলে ধরা হয়েছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিভিন্ন চিত্র। দেয়ালচিত্রে স্থান পেয়েছেন কল্পনা চাকমাও। কোথাও আবার ফুটে উঠেছে মাচাং ঘরসহ পাহাড়ে ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির নানা নিদর্শন। দেয়ালজুড়ে এসব চিত্রকর্মে নতুন কিছুর আহ্বান। তরুণদের নতুন করে দেশ গড়ার স্বপ্ন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাজার ঘাট, হাসপাতাল, থানা এবং উপজেলার বিভিন্ন স্থানে দেয়ালে এক মনে ছবি আঁকা একেঁছে শিক্ষার্থীরা। অঙ্কনেই ফুটে উঠেছে নতুন এক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়। চলার পথে হাটতে হাটতে মোবাইলে ভিডিও করছেন অনেকে, কেউ তুলছেন ছবি। দেয়ালে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার, কল্পনা চাকমার চেহারা ফুটিয়ে তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয়। তারা বলল, আন্দোলনটি সফল হওয়ার পর আমাদের দায়িত্ব আরও বেড়ে গেছে। আমরা রাস্তা পরিষ্কার, ট্রাফিকের কাজ ও দেয়াল লেখনীতেই থামব না। আমরা চাই আগামী প্রজন্মের একটি বাসযোগ্য বাংলাদেশ। তাই দেশ সংস্কারেও আমরা প্রত্যয়ই।শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশ একটি নতুন দেশে রুপান্তর হয়েছে। আমরা পাহারে বৈষম্য দুর করতে চাই। আর যেন পাহাড়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন না হয়। সকলে মিলে এই দেশটা কে একটি সোনার বাংলাদেশে পরিণত করতে বদ্ধপরিকর।
তারা আর চাইনা প্রতিহিংসার রাজনীতি, চাইনা হিংসা বিদ্বেষ। চাই সকলের সমান অধিকার। বাধা আসলে ছাত্র আন্দোলন গড়ে তোলার অঙ্গীকার। পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন, পর্যটনের নামে ভূমি দখল বন্ধ, পাহাড় সেনাশাসন বন্ধ করা, দিতে হবে আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি। আর যেন উদ্ভব না ঘটে স্বৈরাশাসন অঙ্কনে এইসব বিষয় ফুঁটে তুলে বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থীরা।