।। আকাশ মারমা মংসিং বান্দরবান ।।
বান্দরবানের গত দুইদিন ধরে টানা ভারি বর্ষণ শুরু হয়েছে। এই ভারি বর্ষনের ফলে পাহাড় ধ্বসের পাশাপাশি বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে যারা বসবাস করছেন তাদেরকে নিরাপদ স্থানে যেতে মাইকিং করছেন প্রশাসন। সেই সাথে সাত উপজেলায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিতে বসবাস করছে প্রায় ৪০ হাজার পরিবার।
সকাল থেকে টানা ভারি বর্ষনের কারণে চিম্বুক ১২ মাইল সড়কের পাহাড় ধ্বসে যানচলাচল বন্ধ থাকলেও পরে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজন মাটি সড়ানো পর সড়ক সচল অব্যাহত রয়েছে। এছাড়াও থানচি তিন্দু ইউনিয়নের পদ্মাঝিড়ি এলাকায় নৌকা পানিতে ডুবে দুই শিক্ষার্থীর নিখোঁজের খবর পাওয়া গেছে। তবে নেটওয়ার্ক বিহীন এলাকা হওয়াতেই এখনো তাদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। এর আগে গত পরশু নাইক্ষ্যংছড়ি ফুলতলী এলাকায় পাহাড় ধ্বসের একজন নিহত হয়েছে।
প্রশাসন জানিয়েছেন, বান্দরবানে সাতটি উপজেলায় আশ্রয় কেন্দ্র খোলা রাখা হয়েছে ২২০টি। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসরত সকলকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার জন্য প্রশাসন ,রেডক্রিসেন্ট, ফায়ার সার্ভিস দল মিকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে।
আবাহাওয়া অফিস তথ্যমতে, গত ২৪ ঘন্টায় বান্দরবানে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১১৯ মিলিমিটার। ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড রয়েছে ২৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়াও চট্টগ্রামে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। তাছাড়া ভারী বর্ষন জনিত কারণে পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধ্বসের সম্ভাবনা রয়েছে।
বান্দরবানের সদর উপজেলার কালাঘাটা, কাসেমপাড়া, ইসলামপুর, বনরূপাপাড়া, হাফেজঘোনা, বাসস্টেশন এলাকা, স্টেডিয়াম এলাকা, নোয়াপাড়া, কসাইপাড়া সহ বিভিন্ন এলাকায় হাজারও মানুষ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।জেলা সদর উজানী পাড়া ও মধ্যম পাড়া এলাকায় সাঙ্গু নদী তিরবর্তী ভারী বর্ষণের পানি বেড়ে যাওয়াই নিমাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সেসব বাড়িতে বসবাসরত নিরাপদ কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। রুমা সড়কের কৈক্ষংঝিড়ি ও বটতলী পাড়া এলাকায় পাহাড় ধ্বসে বিদ্যুৎ ৩৩ কেভি ও ১১ কেভি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সড়ক ধস রোধ মোকাবিলা, যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সচল রাখা, স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রাখা, বন্যা কবলিত এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে খাবার সংগ্রহ করার ব্যবস্থা আগেই প্রস্তুতি সেরেছে প্রশাসন। তবে আশ্রয় কেন্দ্রেগুলোতে কোন মানুষ আশ্রয় নিতে দেখা যায়নি। তবে এই বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে পানিতে তলিয়ে যেতে পারে শহরের নিমাঞ্চল।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, বান্দরবানে গত দুইদিন ধরে ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। পাহাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসরত মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে যেতে প্রশাসন পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। তাছাড়া বন্যার মোকাবেলা করতে মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, ফায়ার সার্ভিস ও প্রশাসনের লোকজন মাঠে কাজ করে যাচ্ছে।