মংবোওয়াংচিং মারমা।। থানচি।।
কোটি টাকা ব্যয়ের ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণ করলে ও নির্বাচিত চেয়ারম্যান, মেম্বার সংরক্ষিত নারী সদস্যরা পরিষদে না যাওয়া গত ১৪ বছর পর্যন্ত পরিষদের ভবনটি ভূতুরে বাড়ীর মতো অরক্ষিত রয়েছে। বান্দরবানে থানচি উপজেলা ২ নং তিন্দু ইউনিয়নের এ হাল দেখা মিলছে।
গ্রামীণ খেতে খাওয়ার মানুষের জাতীয়তা সনদ, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, বয়স্ক, প্রতিবন্ধি, বিধবা, মায়েদের মাতৃত্ব ভাতা সমূহের হাল নাগাদ তালিকা প্রনয়নের জনভোগান্তির চরম আকারে ধারন করেছে।
তৎকালীন সরকার গ্রামীন অবকাঠামোগত উন্নয়ন, গ্রামীণ মানুষের দৈনাদিন সেবা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত লাভের জন্য যেখানে ভবন নেই সেখানে ২০১০ সালে কোটি টাকার ব্যয়ের নির্মাণ করলেও এখন তা ও অরক্ষিত। শৌচাগার হিসেবে ব্যবহার করছেন পশু প্রাণী। জনপ্রতিনিধিদের অবহেলার ফলে পরিষদে নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত কয়েক হাজার পাহাড়ি সম্প্রাদায়ের মানুষ। এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দারা।
ইন্টারনেট সংযোগের অজুহাতে চেয়ারম্যান ও সচিবরা থানচি সদর ইউনিয়ন পরিষদের দু’ তলা একটি কক্ষে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। তাই ভবনটি সাধারণ জনগনদের সেবাগ্রহন সচল করে নাগরিকদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা কর্মকান্ডে গতিশীল করা দাবী জানান।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদের ভবন থাকার শর্তেও বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে সে সব অফিসের কার্যক্রম উপজেলা সদরে বসে কাজ চালাচ্ছেন তিন্দু ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সচিবরা।
বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা মিলে, তিন্দু ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটি বাজার উত্তর দিকে বিজিবি ক্যাম্পে নিচের অবস্থিত। মনোরম পরিবেশের গড়ে উঠার ভবনটি এখন পরিত্যক্ত। নেই কোনো পরিষদের কার্যক্রম। ভবনের বিভিন্ন অংশে গজিয়েছে আগাছা। পাশের ড্রেন ও স্তূপ থেকে জন্ম নিচ্ছে মশা-মাছি। অকেজো ভাবে পড়েছে বাইরে রাখা সোলার প্যানেলও ও ইন্টারনেটে ওয়াইফাই লাইন ।
সরেজমিনের গিয়ে দেখা যায, তিন্দু ইউনিয়নের ম্রো,মারমা,খিয়াং ও খুমী সম্প্রদায় সহ হাজার হাজার মানুষের বসবাস। সেসব দূর্গম বসবাসকারী নাগরিকদের জন্ম থেকে শুরু করে মৃত্যু ও চেয়ারম্যান সনদসহ একমাত্র ভরসা বাজারে উতর পাশের থাকা পরিষদের ভবনটি। কিন্তু হাতের নাগালে ভবন থাকলেও নাগরিক সেবা ও সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দূর্গম এলাকার বাসিন্দারা। জরুরী প্রয়োজনে সেবা নিতে দ্বিগুন টাকা খরচ করে দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে থানচি উপজেলা সদরে গিয়ে সেবা নিতে আসতে হয় তাদের। প্রয়োজনীয় কাজের ইন্টারনেট সেবা অজুহাত দেখা দিলেও পরিষদ ভবনের ছাঁদের উপরে দেখা মিলে ওয়াইফাই ইন্টারনেট লাইন।
আরও জানা গেছে, পরিষদ ভবনটি সাত থেকে আট বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। মাসিক সমন্বয় সভা ও সরকারী কর্মসূচী থাকলে পরিষদ ভবনটি তালা খোলেন জনপ্রতিনিধিরা। তাছাড়া পশুপ্রাণী ছাড়া চেয়ারম্যান, মেম্বার, মহিলা মেম্বারসহ গ্রাম পুলিশ সদস্যরাও আসেন না পরিষদ ভবনটিতে। নানা অজুহাত দেখিয়ে অকেজো ভাবে ফেলে রেখে থানচি সদরে অস্থায়ী ভবন হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যক্রম শুরু করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান ভাগ্যরান ত্রিপুরা। এতে নানা সমস্যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সেসব ইউনিয়নের বাসিন্দারা।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, চেয়ারম্যান বলেছে এখানে ইন্টারনেট নেই তাছাড়া পরিষদের সকল কাজ ইন্টারনেট দিয়ে কাজ করতে হয় এসব অজুহাত দেখিয়ে থানচি সদরে অফিস করছে। নির্বাচন আগে বলেছিল আমি সব কিছু করব, আর এখন বাড়ির কাছে পরিষদ ভবন থাকলেও যেকোন সনদ পত্র নিতে দ্বিগুন টাকা খরচ করে উপজেলা শহরে যেতে হয়। তাহলে ভবন তৈরী করার কি প্রয়োজন ছিল?
মুঠোফোনে যোগযোগ করা হলে সংযোগ বিছিন্নতার কারণে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব অংক্যসিং মারমা সাথে কথা বলতে পারেনি।
২নং তিন্দু চেয়ারম্যান ভাগ্যরাম ত্রিপুরা বলেন, মোবাইল ইন্টারনেট না থাকায় উপজেলা সদরে স্ব পরিবারে থাকতে হচ্ছে। আমি মাসের একদিন মাসিক সভা সেখানে করি।
উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন বলেন, এ ব্যাপারে আমি চেয়ারম্যান সাথে কথা বলেছি। আগামী মাসের ১ তারিখ রবিবার থেকে সঠিক মত অফিস না করলে আইননানুক ব্যবস্থা করা হবে।