।। আকাশ মারমা মংসিং বান্দরবান ।।
সারাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে উর্ধতন আ.লীগ দালালদের নির্দেশে আমাদের ভাই সন্তাদের উপর গুলি ছুড়তে বাধ্য করা হয়েছে। আমাদের ছাত্র ভাইরা যেভাবে প্রাণ দিতে হয়েছে আমাদের বহু পুলিশ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ তখন অসহায় নির্দেশ না শুনলে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার হুমকি দেন এই আ.লীগ দালালরা। আজ সরকারে দালাদের নির্দেশ পালন করার কারণে আজকে জনগন ও ছাত্রদের কাছে পুলিশ ঘৃণা পাত্র। তাই এই স্বাধীন দেশের দুর্নীতিবাজ, দালালবাজ পুলিশ প্রত্যাখ্যান করে আমরা জনগনের প্রকৃত বন্ধু হিসেবে কাজ করতে চাই।
শুক্রবার ( ৯আগস্ট) বেলা দুইটার দিকে বান্দরবানে পুলিশ লাইন্সে ও এপিবিএন কার্যালয়ের এই বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালনকালে বক্তব্যে এসব কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী পুলিশ সদস্যরা।
বৈষম্যবিরোধী পুলিশ সদস্যরা বক্তব্যে বলেন, স্বৈরাচারী সরকার পদত্যাগের খবর পেয়ে পুলিশ সদস্যদের বিপদে ফেলে দালাল ভুয়া বিসিএস অফিসারগুলো পালিয়ে গেছে। কিন্তু সব অপরাধের ভার পুলিশ ভাইদের উপর ছেড়ে দিয়ে গেছে। দেশের সব পুলিশ সদস্যরা এখন আতঙ্কের দিন কাটাচ্ছে। কর্মস্থল যোগদানের দুরের কথা জনতা সাথে শত্রুতা কারণে পুলিশদের কোথাও চলাফেরা করার স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলেছে। তাই এই স্বাধীন দেশের দুর্নীতিবাজ, দালাল বাজ পুলিশ প্রত্যাখ্যান করে আমরা জনগনের প্রকৃত বন্ধু হিসেবে কাজ করতে চাই। সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রক্ষার জন্য ১১ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে কর্মস্থল না যাওয়ার কর্মবিরতি দেন বৈষম্যের বিরোধী পুলিশ সদস্যরা।
আগে ব্যানার পেস্টুন হাতে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। মিছিলে অংশ নেন শতাধিক বৈষম্যের বিরোধী নারী – পুরুষ পুলিশ সদস্যরা। এর আগে গতকাল মেঘলা জেলা পরিষদ সংলগ্ন ২ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন কার্যালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। সমাবেশে পুলিশ কার্যালয় ঘেরাও করে “আওয়ামীলীগ দালালরা হুশিয়ার সাবধান’ হইরই বিসিএসরা গেলি কই” স্লোগান করতে থাকেন বৈষম্যেবিরোধী পুলিশ সদস্যরা। পরে তারা ১১ দফা দাবী বাস্তবায়ন না হওয়ার পর্যন্ত কর্মস্থল না যাওয়ার কর্মবিরতি দেন।
পুলিশ বাহিনী ১১ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে –
১.বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যে পুলিশ সদস্যদের হত্যা করা হয়েছে, তাদের বিচার করতে হবে।
২. পুলিশ কোনো সরকার বা রাজনৈতিক দলের অধীনে কাজ করবে না, পুলিশ নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে বাংলাদেশের জনগণের সেবা তথা রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত থাকবে।
৩. সারাদিনে ৮ ঘণ্টার বেশি ডিউটি করানো যাবে না।
৪. অধঃস্তন কর্মচারীরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কোনো অবৈধ বা মৌখিক আদেশ পালন করতে পারবেন না।
৫.অধঃস্তন কর্মচারীদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পদোন্নতির মত পন্থা অবলম্বন করতে হবে।
৬. বার্ষিক নৈমিত্তিক ছুটি ২০ দিনের পরিবর্তে ৬০ দিন করাতে হবে।
৭. ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মত অধঃস্থন কর্মচারীদের সোর্স মানি দিতে হবে।
৮. বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি ইউনিটে ১০ তারিখের মধ্যে টিএ এবং ডিএ বিল পরিশোধ করতে হবে।
৯. নতুন বেতন স্কেল প্রণয়ন করতে হবে।
১০. ঝুঁকিভাতা বাড়াতে হবে।
১১. পুলিশ হেডকোয়ার্টারস থেকে শুরু করে বাংলাদেশ পুলিশের প্রত্যেকটি পুলিশ লাইন্স, থানা, ফাঁড়ি, গার্ড, ক্যাম্পের নিরাপত্তা বেষ্টনী জোরদার করে নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করতে হবে।