বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ৩০, ২০২৫
Homeবান্দরবানশিক্ষক নেই, থমকে আছে পাঠশালা: রুমার পাহাড়ে শিশুদের জিপিএ–৫ এর স্বপ্ন ফিকে...

শিক্ষক নেই, থমকে আছে পাঠশালা: রুমার পাহাড়ে শিশুদের জিপিএ–৫ এর স্বপ্ন ফিকে হয়ে যাচ্ছে!

অনলাইন ডেক্স :

বান্দরবানের রুমা উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার আলো ক্রমেই ম্লান হয়ে পড়ছে। যে সব বিদ্যালয়ে একসময় শিশুদের হাসি–কোলাহলে মুখর থাকত প্রাঙ্গণ,সেখানে এখন নেমে এসেছে নীরবতা, অনাগ্রহ আর হতাশার ছায়া।

স্থানীয় অভিভাবক ও শিক্ষাপ্রেমীরা অভিযোগ করেছেন, এসব বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষক বর্তমানে শিক্ষার্থীদের মানোন্নয়ন বা পাঠদানের প্রতি আন্তরিক নন। বরং তারা নিজেদের পে–স্কেল, বেতন–ভাতা ও প্রশাসনিক সুবিধা নিয়েই বেশি ব্যস্ত। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ, পাঠদানের মান, কিংবা জিপিএ–৫ অর্জনের মতো বিষয়গুলো যেন তাদের ভাবনার পরিধি থেকে হারিয়ে গেছে।

অন্যদিকে, রুমার দুর্গম পাহাড়ি পথ, অনুপযুক্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও নিরাপত্তাজনিত অজুহাতে বহু শিক্ষক নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন না। মাসের পর মাস অনুপস্থিত থেকে তারা শুধু নামমাত্র কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থাকেন। ফলে ছোট ছোট শিশুরা নিয়মিত পাঠ থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়ছে, আর শিক্ষার প্রতি তাদের আগ্রহ ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে।

স্থানীয় শিক্ষাবিদদের মতে, প্রাথমিক স্তরই শিক্ষার ভিত্তি। এই স্তর দুর্বল হলে ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা ও জীবনের প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে। তাই এখনই প্রয়োজন কার্যকর প্রশাসনিক তদারকি, শিক্ষকদের দায়িত্ববোধ জাগ্রত করা এবং বিদ্যালয়গুলোকে শিক্ষার প্রকৃত কেন্দ্রে পরিণত করা।

রুমার অভিভাবক সমাজের প্রত্যাশা শিক্ষকরা যেন নিজেদের দায়িত্ব ও অঙ্গীকার পুনরায় স্মরণ করেন, আন্তরিকতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে পাঠদান নিশ্চিত করেন, যাতে পাহাড়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিশুদের মুখে আবারও জ্বলে ওঠে শিক্ষার দীপ্ত আলো।

একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমাদের রুমা উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা এখন ধ্বংসের পথে। শিক্ষকরা নিয়মিত ক্লাস না নিলে আমাদের সন্তানরা শিক্ষা পাবে কোথায়? জিপিএ–৫ পাওয়ার আশা তো এখন কেবল স্বপ্ন হয়ে গেছে।”

স্থানীয়দের অভিযোগে জানা গেছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা তার দায়িত্ব পালনে গাফিলতি করছেন। কোনো বিদ্যালয়ে নিয়মিত পরিদর্শনে না গিয়ে তিনি অফিসেই অধিকাংশ সময় কাটান এবং বেতন-ভাতাসহ ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকেন। শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় অভিযোগ করলেও, তিনি সে বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয়রা আরও জানান, শিক্ষা কর্মকর্তা নিজেও নিয়মিত অফিসে উপস্থিত থাকেন না। সপ্তাহে মাত্র দুইদিন “সোমবার ও বৃহস্পতিবার” অফিসে আসেন,বাকী দিনগুলোতে বাসায় থেকেই সময় কাটান। ফলে শিক্ষা কার্যক্রমে স্থবিরতা তৈরি হচ্ছে এবং বিদ্যালয়গুলোতে শৃঙ্খলা ও তদারকির অভাব প্রকট হয়ে উঠেছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

জনপ্রিয় সংবাদ

পাঠকের মতামত

error: