রোয়াংছড়ি ছাত্রাবাস নির্মাণে অনিয়মের নিউজ করায় সাংবাদিককে হুমকি দিলেন ঠিকাদার

0
43

।।বান্দরবান প্রতিনিধি।।

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলায় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস ভবন নির্মাণে অনিয়মের বিরুদ্ধে “কোটি টাকার ছাত্রাবাস ভবন নির্মাণের ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি অভিযোগ” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর সেলিম এন্ড ব্রাদার্স এর স্বত্ত্বাধিকারী লাইসেন্স রাঙ্গামাটি ঠিকাদার আরাফাত হোসেন ওরফে আকাশ সাংবাদিককে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।

গতকাল সন্ধায় ফোন করে অনিয়মের সংবাদ প্রকাশের জেরে দ্যা ডেইলি পোষ্ট ও নাগরিক টিভির বান্দরবান জেলা প্রতিনিধিকে ফোন করে ব‍্যবস্থা নেওয়া হুমকি দেন ঠিকাদার । তবে কি ব‍্যবস্থা নিবেন সেই বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেননি তিনি।

মুঠোফোনে ঠিকাদার প্রতিনিধিকে হুমকি দিয়ে বলেন, যে নিউজ করেছে তার বিরুদ্ধে যতদুর পর্যন্ত করা লাগবে করব। আমাকে যে অপমানটা করেছে আমি সেই অপমানটা একটা হলেও জবাব দিব। এই নিউজ কে লিখেছে তাকে গোড়া থেকে বের করবো বলে জানিয়েছেন তিনি।

গেল ১৪ মে মঙ্গলবার সকালে ছাত্রাবাস ভবন নির্মাণে অনিয়ম হচ্ছে এমন স্থানীয়দের অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে সরেজমিনে যান দ্যা ডেইলি পোষ্ট ও নাগরিক টিভি জেলা প্রতিনিধি ও রোয়াংছড়ি উপজেলা পার্বত্য নিউজ প্রতিনিধি। ঘটনাস্থল সরেজমিনে পর দেখা অনিয়মের কর্মকান্ডে প্রমাণ। ভবনটির নির্মাণের সামনে রাখা হয়েছে ঝিড়রর বালু, নিম্নমানের ইটসহ নানা আনুষাঙ্গিক নির্মাণসামগ্রী। হাতে প্রমাণ নিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বললে আরো বেড়িয়ে আসে ভবণ নির্মাণের অনিয়মের কাজ।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, শিডিউল অনুযায়ী কাজ না করে তার পরিবর্তে ঝিরি বালু , নিম্নমানের ইটসহ নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ শুরু করেছেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। বর্তমানের সেসব নিম্ন সামগ্রী দিয়ে গড়ে উঠেছে তিনতলা ভবন। বারবার কাজের মান ঠিক রেখে কাজ করার জন্য এলাকাবাসী অনুরোধ করেও মেলেনি কোন সুরাহা। বরংচ রাত গভীরে সেসব নিম্ন সামগ্রী দিয়ে তরিঘরি করে কাজ চলমান রেখেছে ঠিকাদার। তাছাড়া রোয়াংছড়ি ঝিরি বালু দিয়ে দুতলা ভবনের ছাদ ঢালাই দেয়ার পর ধ্বসে পড়ে গেছে বলে অভিযোগও করেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়দের অভিযোগে অনিয়মের বিষয়ে ঠিকাদার সাথে যোগাযোগ করা হলে অনিয়মের ধামাচাপা দিতে প্রতিবেদককে টাকা প্রলোভন দেখিয়েছিলেন তিনি।

এদিকে ঝিড়ির বালু,ইটসহ নিম্নসামগ্রী ব্যবহার নিয়ে শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী অস্বীকার করে বলেছেন, ঝিড়ির বালু ফ্লোরে ভরাটের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। বীম, ছাদ ও ব্যাস ঢালাইয়ে কাজে ব্যবহার করা হয়নি। ফ্লোরের ভরাটের জন্য সেই ঝিড়ি বালু ব্যবহার করা হয়েছে বলে একই কথা বলেছেন সহকারী প্রকৌশলী ও ঠিকাদার। কিন্তু আজ সকালে দেখা মিলেছে অন্য রকম চিত্র। পূর্বে কথানুযায়ী ৮শত ফুট বালু ফ্লোরে দেওয়া হয়ে গেছে বলেছিলেন ঠিকাদার । কিন্তু সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরে তড়িঘড়ি করে নতুনভাবে স্থানীয় সেই ঝিড়ি বালু পূণরায় উত্তোলন করে সকালে নতুন করে ফ্লোরে ভরাটে কাজ শুরু করেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি।

তড়িঘড়ি করে কেন ফ্লোরে বালু ভড়াট করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, এসব কাজে তড়িঘড়ি করে করবে কেন? সমন্ধয় করে দেখি আর আমি এখন কাজে ব্যস্ত আছি। ঢাকা থেকে টিম আসলে আগামী সপ্তাহের সেখানে যাচ্ছি বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, ২০২০- ২১ অর্থ বছরে রোয়াংছড়ির সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস ভবন নির্মাণের প্রকল্পটি পেয়েছেন সেলিম এন্ড ব্রাদার্স স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। যার প্রকল্পের বরাদ্ধের ব্যয় ধরা হয়েছে ২কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা। প্রকল্পটি চলতি বছরের জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here