
স্টাফ রিপোর্টার:
বান্দরবানের রুমা উপজেলায় শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে এক প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ-৭ ডিসেম্বর বিকেল ৩টায় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন নবাগত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ এমদাদুল হক শরীফ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন রুমা -৩৬ বীর’র জোন প্রতিনিধি ক্যাপ্টেন ইব্রাহীম, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাঃ পাপিয়া দাস,থানা প্রতিনিধি মোঃ টিটু সরদার,২নং রুমা সদর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অংসিংনু মারমা,৩নং রেমাইক্রী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিরা বম, ৪নং গালেঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেনরত ম্রোসহ উপজেলা বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা,রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ীক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
সভা শুরুতে নবাগত নির্বাহী কর্মকর্তা উপস্থিত সকলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। এরপর তিনি রুমা উপজেলার সার্বিক চিত্র তুলে ধরার আহ্বান জানান এবং এলাকার চলমান সমস্যা, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনাগুলো উপস্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য রাখতে অনুরোধ করেন।
মোঃ ইদ্রীস মিয়া বলেন,হাসপাতালের চারপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা আবর্জনা ও ডাক্তার সংকট মানুষের চিকিৎসা সেবাকে ব্যাহত করছে। হাসপাতালকে পরিচ্ছন্ন ও সুশৃঙ্খল রাখা অত্যন্ত জরুরি, কারণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ রোগীদের আরোগ্য লাভে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তিনি আরও বলেন, চিকিৎসক স্বল্পতার কারণে রোগীরা সময়মতো সেবা পাচ্ছে না, যা দ্রুত সমাধানের জন্য কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া প্রয়োজন।
অগ্রবংশ নির্বাহী পরিচালক উঃ নাইন্দিয়া থেরঃ বলেন,“রুমা উপজেলা এলাকার অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়মিত পাঠদান না করে কীভাবে বেতন গ্রহণ করেন—এ বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বিশেষ করে দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলের পাড়াগুলোতে যদি এমন পরিস্থিতি চলতে থাকে, তবে আমাদের কোমলমতি শিশুদের শিক্ষা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ভুল পথে চলে যাওয়ার আশঙ্কা আরও বৃদ্ধি পাবে। শিক্ষকরা যদি দায়িত্বশীলভাবে পাঠদান নিশ্চিত না করেন,তাহলে আগামীর প্রজন্মকে সঠিক পথে গড়ে তোলা সম্ভব হবে না। তাই সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থীর উপস্থিতি ও মানসম্মত পাঠদানের মাধ্যমে শিক্ষার পরিবেশ উন্নত করা এখন সময়ের দাবি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আশীষ চিরান বলেন, “শিক্ষকদের পেছনে পেছনে ঘুরে কাজ করানো সম্ভব নয়। প্রত্যেক শিক্ষককেই দায়িত্বশীলতার সঙ্গে নিজের কর্তব্য পালন করতে হবে। শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে সবাইকে আন্তরিকভাবে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে। আমরা তদারকি ও দিকনির্দেশনা দেব, কিন্তু মূল পরিবর্তন আনতে হলে শিক্ষকদেরই সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ এমদাদুল হক শরীফ বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা একটি জাতির ভিত্তি গড়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তর। তাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রম,শিক্ষার মান,শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি এবং বিদ্যালয়ের সার্বিক পরিবেশের ওপর প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে আরও নিবিড়ভাবে নজরদারি ও তদারকি বাড়ানোর নির্দেশনা দেন। শিক্ষার মান উন্নয়ন আমাদের অগ্রাধিকার। প্রাথমিক পর্যায়ে সঠিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হবে যোগ্য,সুশিক্ষিত ও দায়িত্বশীল নাগরিক।
তিনি আরও বলেন উপজেলা হাসপাতালে কয়েকটি বিষয় বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রথমত,হাসপাতালটি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা অত্যন্ত জরুরি। রোগীরা চিকিৎসা নিতে এসে যেন কোনোভাবেই অতিরিক্ত সংক্রমণ বা নতুন কোনো অসুস্থতার ঝুঁকিতে না পড়ে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। দ্বিতীয়ত, রোগীদের যথাসময়ে সেবা প্রদান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সময়মতো চিকিৎসা, পরামর্শ এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে রোগীর অবস্থা আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে। তাই দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ও স্টাফদের আন্তরিকতা, সময় ব্যবস্থাপনা এবং মানবিক আচরণ রোগীদের সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আসন্ন শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে সভায় নানা দিকনির্দেশনা ও প্রস্তুতি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
