
ডেক্স রিপোর্ট।।
সারাদেশ ব্যাপী রাষ্ট্রীয় শোক পালন করলেও বান্দরবানে রুমা উপজেলায় পাইন্দু ইউনিয়নের জুরবারং পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শোক পালন না করার দৃশ্য দেখা মিলেছে। দায়িত্বরত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হ্লাসিংমং মারমা আজকের দিনে যে শোকের ছায়া অর্ধ পতাকা উত্তোলন করতে হবে সে বিষয়েও অবগত নন। প্রতিদিনের মতো স্বাভাবিকভাবে উত্তোলন করেছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি একটি দেশের জন্য বড় অপমানদায়ক। তিনি রাষ্ট্রকে অসম্মান করেছে। শুধু তা নই, নানান অভিযোগ রয়েছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককের বিরুদ্ধে। অনিয়ম, দুনর্ীতি ও অনুপস্থিতসহ নানা অভিযোগ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা মিলে, বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে নেই কোন উন্নতমানে টেবিল-চেয়ার, নেই কোন সৌরবিদ্যুতে সু-ব্যবস্থা। আজ শোকের দিনেও পালন করেননি ঐ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শ্রেণী পাঠদানে গাফিলতির প্রভাবে শিক্ষার্থীরাও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককের নাম অজানা। প্রতি বছরের যে স্কুলে উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সেটাও বাস্তবায়ন না করে অর্থ আতৎসাত করেছে। আজ মঙ্গলবার (২২জুলাই) শিক্ষকদের উপস্থিতি হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরের চিহ্নও দেখা পাইনি।
৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কোমলমতি শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, যিনি দায়িত্বরত প্রধান শিক্ষক সাপ্তাহে ২-৩দিন বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকে, সে জন্য ওনার নাম জানা নাই বলে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন তারা।
বিদ্যালয়ের উন্নয়নের তহবিল ও সংস্কার কাজে যে বরাদ্দ গুলো দেওয়া হয় সে বিষয়ে এক শিক্ষকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ দুই-তিন বছর ধরে যতগুলো বরাদ্দ আসে সেগুলো আমাদেরকে কখনো অবগত করা হয়নি এবং কত টাকা বরাদ্দ পাই সেগুলো জানা নাই। তবে শুনেছি প্রতি বছরে বরাদ্দ আসে। তারা বলেন, এ কয়েকবছরে শুধু দুইটি প্লাস্টিক চেয়ার কিনতে দেখেছি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য।
সংশ্লিষ্ট পাড়ার অভিভাবকদের সাথে বিদ্যালয়ে কার্যক্রম বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি পুরো অকোজো হয়ে গেছে, আমাদের কথা তো কখনো শুনতেন না তিনি,শুধু নিজের ইচ্ছা মতো ক্লাস না করে ইচ্ছা মতো বিদ্যালয় ত্যাগ করতে দেখা যায়। আজকেও তিনি বিদ্যালয়ে ৩০মি মতো উপস্থিত থেকেই বিদ্যালয় ত্যাগ করেছে। বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকলেও ঠিক মতো পাঠদান করে না। বরাদ্দ পেলেও নিজের পকেট ভারী করে, কোন উন্নয়ন করে না। আমাদের অশিক্ষিত মা বাবাদের কথা কে বা কারা চিন্তা করে। আমাদের ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া নিয়ে খুবই চিন্তিত আছে বলে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হ্লাসিংমং মারমা ওরফে হ্লাচিংমং এর সাথে গাফিলতি ও অনিয়ম বিষয় নিয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আসলে বাড়ির কাজের চাপের শোক পালন করতে ভুলে গেছি, এমনেতে আমার মাথাতে নেই। উন্নয়ন তহবিল ও স্কুল সংস্কারের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি কিছু বলতে পারেননি। শিক্ষকদের ছুটির বিষয়ে জানতে চাইলেও কিছুই জবাব দিতে পারেননি।
গাফিলতির বিষয়ে জানার জন্য রুমা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তা আশীষ চিরান এর দেখা করার জন্য অফিসে গেলে দেখা করতে পারেনি, সংশ্লিষ্ট শাখায় কর্মকর্তা বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন স্যার আজকে আসেনি। পরে যোগাযোগ করার জন্য একাধিক বার কল করা হলেও কল ধরেনি তিনি।
এ বিষয়ে নিবার্হী কর্মকর্তা মো. আদনান চৌধুরী এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রাষ্ট্রকে অসম্মান করা, অনিয়ম, দুর্নীতি ও অনুপস্থিতসহ যতগুলো রয়েছে সবকিছুৃ প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তা যিনি আছেন তাকে বলে আমি তদন্ত করার জন্য নির্দেশ দিব।