রামগড়ে স্বামীর হাত-পা বেঁধে স্ত্রীকে গণধর্ষণ, থানায় মামলা না নেওয়ার অভিযোগ

0
28

সাইফুল ইসলাম।। রামগড়।।

খাগড়াছড়ির রামগড়ের পাতাছড়া ইউনিয়নের দুর্গম কালাপানি এলাকায় স্বামীকে বেদম প্রহার করে হাত-পা বেঁধে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ষণে বাধা দেয়ায় গৃহবধূর বৃদ্ধা শাশুড়িকে বেদম প্রহার করে দুর্বৃত্তরা। পরে ঘরের বিভিন্ন জিনিসপত্র লুটে নিয়ে যায় তারা। বৃহষ্পতিবার(২২ আগস্ট) গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। বন্যায় ডুবে যাওয়ার রাস্তার পানি সরে গেলে রবিবার ভিকটিম ও তার আহত স্বামী এবং শাশুড়ি রামগড় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসেন। আহত স্বামী রহমত আলী জানান, রামগড় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদেরকে খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। রবিবার সন্ধ্যার একটু আগে তারা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, হাসপাতালে যাওয়ার আগে স্ত্রীসহ তারা রামগড় থানায় অভিযোগ দায়ের করতে যান। কিন্তু পুলিশ তাদের মামলা নেয়নি।

জানাযায়, পাতাছড়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের কালাপানি গ্রামটি উপজেলার অত্যন্ত দুর্গম পাহাড়ি এলাকা।

রহমত আলী বলেন, বৃহষ্পতিবার(২২ আগস্ট) রাত ১২ টার দিকে ১৮-২০ জন পাহাড়ি সন্ত্রাসী তাদের বাড়িতে হানা দেয়। তারা প্রথমে ঘর থেকে তাকে বাহিরে এনে হাত-পা ও মুখ বেঁধে বেদম মারপিট করে । পরে তাকে বেঁেধ রেখে ৫জন সন্ত্রাসী ঘরে ঢুকে তার স্ত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এসময় তার বৃদ্ধা নুরুচ্ছফা বেগম ধর্ষণে বাধা দিলে সন্ত্রাসীরা তাকেও প্রহার করে। তিনি আরও জানান, গণধর্ষণের পর সন্ত্রাসীরা তার মা ও স্ত্রীর শরীর থেকে স্বর্ণালংকার কেড়ে নেয়। তারা নগদ ৫২ হাজার টাকা, সোলার প্যানেলের দুটি ব্যাটারিসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র লুটে নিয়ে ভোর ৪টার দিকে চলে যায়। চলে যাওয়ার সময় জায়গার দলিলপত্র তাদের কাছে পৌঁছে দিয়ে দ্রæত অন্যত্র চলে যেতে হুমকী দিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীদের মধ্যে ছয়জনকে চিনলেও তিনজনের নাম পরিচয় জানেন তিনি। দরিদ্র কৃষক রহমত আলী আরও অভিযোগ করে বলেন, বন্যার কারণে তারা গত ২দিন ঘর থেকে বের হতে পারেননি। রাস্তা থেকে পানি সরে গেলে রবিবার বেলা ১১টার দিকে তিনি তার স্ত্রীকে সাথে নিয়ে আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশিসহ রামগড় থানায় অভিযোগ দায়ের করতে যান। কিন্তু পুলিশ তাদের মামলা নেয়নি। এ বিষয়ে রামগড় থানার অফিসার ইনর্চাজ(ওসি) দেব প্রিয় দাশ বলেন, ‘ওই গৃহবধূ তার স্বামীসহ থানায় এসেছিলেন। ধর্ষণের ৭২ ঘন্টার পর কোন আলামত পাওয়া যায় না। তবুও নারী পুলিশ সদস্যের মাধ্যমে খতিয়ে দেখা হয়েছে। কিন্তু ধর্ষণের কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি।’ উল্লেখ্য, গত ২৩ আগস্ট উপজেলার পাতাছড়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বাজারহাট পাড়ায় জনৈক পাহাড়ি গৃহবধূকে(৪৯) গণধর্ষণের অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূ বাদি হয়ে ইউছুফ, রানা, ও ফয়সালের নাম উল্লেখ করে একটি ধর্ষণ মামলা রুজু হয়।

এদিকে, রামগড়ের পাতাছড়া ইউনিয়নে দুই গৃহবধূর ধর্ষণের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here