রাজস্থলীতে দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে বিপাকে শ্রমজীবী মানুষ 

0
138

উচ্চপ্রু মারমা।।রাজস্থলী।।

শরতের নীলকাশ, সাদা মেঘের ভেলায় প্রকৃতি ভেসে যায় টানা বৃষ্টির ছোঁয়ায়। কারও জন্য রোমাঞ্চকর মন মাতানো পরিবেশ। আবার অনেক ভুখা লোকদের দুর্ভোগের শেষ নেই। গতকয়েক দিনের সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন জেলার ধারাবাহিকতায় রাঙামাটির রাজস্থলীতে নেমেছে প্রবল বৃষ্টি। প্রকৃতির এমন বর্ষণমুখরতায় মলিন হয়ে পড়েছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের মুখ।

গত দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে রাজস্থলী বাঙ্গালহালিয়ার ডাক বাংলা, বাজার এলাকায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বাঙ্গালহালিয়ার বাজারের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা, যান ও মানুষের চলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে।

এছাড়া রাজস্থলী সড়কের সেনা বাহিনী ক্যাম্প সংলগ্নে জমেছে পায়ের গোড়ালি থেকে হাঁটু পানি। গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছাড়া বাড়ি থেকে তেমন বের হচ্ছেন না সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ।

দিন আনে দিন খায় এমন মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,দুই তিনদিন ধরে ঝরঝর বৃষ্টি ঝরছে তো ঝরছেই। অতিবৃষ্টির কারণে কাজে যেতে মহা দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে তাদের।

বৃষ্টিতে ভিজে সুবুডুবু বাঙ্গালহালিয়া সড়কে অটো রিকশাচালক রতন বলেন, বৃষ্টির কারণে গত তিনদিন ধরে আয়-রোজগার একদম কম। তিনি বলেন, মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ায় মঙ্গলবার ও বুধবার রাজস্থলীর দুই হাটবাজারে মানুষ বাজার করতে বের হচ্ছে না।

চাইমুচিং মারমা নামে আরও এক রিকশাচালক বলেন, ‘দিন আনি দিন খাই। বাজারে গেলেই সবকিছুর দাম সাধ্যের বাইরে। এর মধ্যে এরকম আবহাওয়ায় বর্তমানে চলা বড় দায়।’

উপজেলার ঝাল মুরি ও চানাচুর বিক্রেতা এক ব্যক্তি বলেন, ‘টানা বৃষ্টির জন্য আমার মতো খেটে খাওয়া মানুষদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আজ রাজস্থলী বাজারহাটের দিন মানুষ নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যবহারের জিনিস কেনার জন্য বাজারে আসেন। সারা সপ্তাহের রুজি বাজারে করা যায়। কিন্তু এই বুধবারে হাটের দিন আমাদের কপালে হাত। বাঙ্গালহালিয়া বাজারের ফুটপাতে তরকারি বিক্রেতা বলেন সকাল বিকাল তরকারি বিক্রি করি। কিন্তু বৃষ্টির কারণে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে মানুষ বের হচ্ছে না। তবে যারা বের হয়েছেন জীবিকার তাগিদে, তারা দুর্ভোগে পড়েছেন।’

রাজস্থলী বাজার এলাকার চা দোকানি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে সারাদিন ধরে ক্রেতা একদম কম। প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ কাপ চা বিক্রি করি। আর আজকে ৫০ কাপ চা বিক্রি করতে দম বের হয়ে যাচ্ছে।’

একজন সরকারি চাকরিজীবী বলেন, বৃষ্টির জন্য অফিসের ছুটি শেষে ঘরে বসে কাটাতে হচ্ছে। জানালা দিয়ে দেখা যায় উপজেলার পথঘাটে জনশূণ্য।

অন্যদিকে আবহাওয়া অফিস থেকে জানা গেছে, সাগরে সৃষ্টি হওয়া নিম্মচাপ এবং এখনো মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকার প্রভাবে বৃষ্টি হচ্ছে। তবে কয়েক দিনের মধ্যে কিছুটা কমে আসতে পারে বৃষ্টি।

এ বিষয়ে রাজস্থলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সজীব কান্তি রুদ্র বলেন, প্রবল বৃষ্টির কারণে জনজীবন বিপন্ন, ফলে আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যে কোন মুহুর্তে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার ব্যবস্থা করেছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here