আরাফাত হোসেন বেলাল।।লংগদু।।
মৃত্যুর সনদ অনুযায়ী ব্যাক্তিটি মারাগেছে ২০১৬ সালের ৫তারিখ ১ মাসে। পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ৮ মাসে এসে রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলার ৬নং মাইনীমুখ ইউনিয়নের তার নিজস্ব রেকর্ডীয় ২৫নং সোনাই মৌজার হাজাছড়া এলাকার ৭৯ নাম্বার হোল্ডিং এর ৪ একর জায়গা নিজেদের নামে কাগজ করে নেয় জৈনক আনোয়ার হোসেন নামে এক ব্যাক্তি।
মূলত জায়গাটি ছিলো মেহের আলী নামে এক ব্যাক্তির। তিনি ২ হাজার সালের দিকে ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে, তার স্ত্রী তাকে (স্বামীর) উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাড়ি বরিশাল নিয়ে যায়। দাম্পত্য জীবনে তাদের একটি মাত্র মেয়ে হওয়ায় তারা অত্র এলাকায় আর আসেনি।২০১৬ সালে মেহের আলীর মৃত্যুর খবর শুনে আনোয়ার সু- কৌশলে, ৫নং সোনাই এলাকার ৫নং ওয়ার্ডের আব্দুর রহিম কে মেহের আলী সাজিয়ে কোড মিউটেশন করে ৩ একর ৯৫ শতাংশ জায়গা নামধারী মেহের আলীর থেকে ১লক্ষ টাকা দিয়ে ক্রয় করে নিজের নামে রেকর্ড করে নেয়।
পরবর্তীতে আনোয়ার নিজের ভাই আমজাদ এর নিকট ১.৫০ একর ও মালেকের নিকট ১.৫০ একর মোট ৩ একর জায়গা বিক্রি করে দেয়। বাকী ৯৫ শতাংশ জায়গা আনোয়ার নিজের নামে রাখে।
এরপর মালেক এবং আমজাদ একই জায়গা(তিন একর জায়গা) ভোগদখলে থাকা দুলালের নিকট দেড় লাখ টাকা করে মোট তিন লাখ টাকায় ৬ তারিখ ৬ মাস ২০২৪ সালে বিক্রি করে দেয়। বর্তমানে তিন একর জায়গা দুলালের নামে এবং ৯৫ শতাংশ আনোয়ারের নামে রয়েছে।
ভূমি খেকোদের কাড়াকাড়ি মুল মালিক জায়গা শূণ্য। উক্ত ঘটনায় আনোয়ার দুই ব্যাক্তিকে মেহের আলী সাজিয়ে আইনের চোখে ধুলা দিয়ে জায়গায় হাতিয়ে নিয়ে থাকলেও। মুল মালিক নামধারী মেহের আলী আব্দুর রহিম কে খুজে বের করে।
সাংবাদিক ঘটনা স্থলে গেলে বর্তমান (মেহের আলী) আব্দুর রহিম জানায়, আনোয়ার আমাকে লালসা দেখিয়ে বলে আপনার আইডি কার্ড এবং ছবি লাগবে। তারা আমার ছবি আর আইডি কার্ড দিয়ে দু নাম্বারি করে অন্যর জায়গা দখল করে নিবে আমি জানিনা। আনোয়ার জালিয়াতি করে তার ভাই মালেকের মাধ্যমে মানুষের জায়গা হাতিয়ে নিয়েছে।
আব্দুর রহিমের নাতি রমজান আলী ও খোরশেদ আলী জানায়, কয়েকমাস আগে দুলাল ও হারেছ আলী রাতে আমার নানার কাছে আসে এবং তার কাছে জানতে চায় তিনি মেহের আলী কিনা। তখন নানা বলে না আমি আব্দুর রহিম। আনোয়ার মালেক তারা জালিয়াতি করে মেহের আলীর জায়গা নিয়েগেছে।
দুলালের কাছে জানতে চাইলে দুলাল বলেন,আমি ২ হাজার সালে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে মেহের আলী ৪ একর জায়গা ক্রয় করে নিয়েছিলাম। কিন্তু মেহের আলীর মৃত্যুর পর আনোয়ার এবং মালেক তারা এই জায়গা তাদের দাবী করে, তখন ২০২২ সালে আমি আনোয়ারের নামে আদালতে একটি মামলা দায়ের করি। তখন আতালতে তারা ভুয়া একজন ব্যাক্তিকে মেহের আলী সাজিয়ে হাজির করলে, আমার মামলা খারিজ করে দেয় আদালত। পরে আমি আবার তাদের দুই ভাই আমজাদ এবং মালেকের কাছ থেকে জায়গা ক্রয় নিয়েছি।
তবে দুলাল জানায়, উক্ত জায়গা মেহের আলীর ছিলো। আমি এই জায়গায় ভোগদখলে ছিলাম। পরবর্তী নানারকম সমস্যা কাটিয়ে আবার এই জায়গায় ক্রয় করতো হলো মালেক এবং আমজাদ তাদের দুই ভাইয়ের থেকে। কিন্তু এখন আবার মুল মালিক আসায় আমি আবারো বিপাকে পড়তে বসেছি। আমাকে আপনারা যেখানে নিয়ে যান আমি সেখানেই যাবো। যারা অন্যায় করছে তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।
বর্তমানে মেহের আলীর ওয়ারিস স্ত্রী ও মেয়ে তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি ফিরে পেতে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে দৌঁড়াচ্ছেন। সঠিক বিচারের আশায় লংগদু জোনে তারা আবেদন জানায়। শহর থেকে এসে উপজেলার ভূমিদস্যুদের সিন্ডিকেট দেখে তারা হতাশ। তারা দাবী করে বলেন, আমাদের ৪ একর জমির সকল কাগজ পত্র রয়েছে। মেহের আলীর স্ত্রী জানায়, আমার স্বামীর মুত্যুর পর তারা সুযোগ স্থানীয় রহিমকে মেহের আলী বানিয়ে আমাদের জায়গা কাগজ করে নেয়। এই কাগজ করতে তারা দুইবার দুজনের ছবি ব্যবহার করে দুটাই মেহের আলী বলে দাবী করে। অথছো আমার স্বামী মারা গেছে ১৬ সালের ১মাসে। আমার স্বামী কি ভাবে তাদের মিউটেশন করে জায়গা দিলো। পরে আমরা এবিষয়ের সত্যতা জানতে দুলালের কাছে গেলে রহিমের কাছে গেলে রহিম স্বীকার করে বলে যে এসব জালিয়াতি করেছে। তিনি দাবী করে বলেন আমি আমার জায়গা ফেরত চাই।
এসব বিষয়ে জানতে মালেকের ফোন নাম্বারে বারবার যোগাযোগ করলেও বন্ধ পাওয়া যায়। তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
ঘটনার মূল মালিক আনোয়ারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।