
সুজন কুমার তঞ্চঙ্গ্যা, বিলাইছড়ি:
বিলাইছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় টু ডরমিটরি সংযোগকারী ব্রীজটি পারাপারে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। একই জায়গায় দুটি ব্রীজ হলেও মিলছেনা কোনো সমাধান। বর্ষা মৌসুমে হ্রদের পানি বাড়লে পাকা ব্রীজটি পানির নিচে হয়ে যায়। কাঠের ব্রীজটিও ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে। প্রতিবছর কাঠের ব্রীজটি মেরামতের খরচ লাগে প্রায় দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকা। এভাবে মেরামত করতে হয়। সঠিক পরিকল্পনা অভাবে সরকারের টাকা বছরে বছরে বেশি অপচয় হয়ে যাচ্ছে। স্থায়ী পাকা ব্রীজেই একমাত্র সমাধান বলে মনে করছেন স্থানীয় ও সংশ্লিষ্টরা। সরেজমিনে দেখতে গিয়ে দেখা যায় যে, বিলাইছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় হতে ডরমিটরি পর্যন্ত প্রায় ৬০ মিটারে একটি কাঠের ব্রীজ। বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় শত শত শিক্ষার্থী পারাপার হচ্ছে। যেকোনো মূহুর্তে ভেঙ্গে পড়তে পারে। নীচের দিকে অনেকগুলো কাঠের খন্ড ভেঙ্গে পড়েছে। যে কোনো মূহুর্তেই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর এই ব্রীজেই চলাচল করে।
স্থানীয় বাসিন্দা আলী হায়দার জানান, প্রতিদিন বিদ্যালয়ের পাঁচ- সাতশত শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ চলাচল করছে এই ব্রীজের উপর দিয়ে । গত বছর ঈদুল আজহার পরে ব্রীজটি মেরামত করা হয়েছে। বর্তমানে চলাচলে প্রায় অনুপযোগী ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে। রিক্স নিয়ে পারাপার হচ্ছে শিক্ষার্থী ও পথ চারীরা। বিগত সরকারের আমলে কাঠের ব্রীজটি নির্মাণের আগে যে পাকা ব্রীজটি নিমার্ণ করা হয়েছে। সঠিক পরিকল্পনার অভাব ও কত ফুট উপর দিয়ে করবে সেটা না জানার কারণে তা কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি পেলে পানির নীচে তলিয়ে যায়। ডুবে থাকে বছরে প্রায় কয়েক মাস। প্রতিবছর জুন- জুলাইয়ে কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি পেলে পানির নীচে ডুবে যায়, অক্টোবর-নভেম্বরে শুকালে ভেসে ওঠে। যার ফলে সে সময় পারাপার হতে পারে না। এর পরে সিদ্ধান্ত নেয় গাছের খুঁটি ও তক্তা দিয়ে তৈরি করে কাঠের শক্ত ব্রীজ। কিন্তু তক্তা ও গাছগুলো বর্ষায় ভিজে এবং গরমে শুকিয়ে যাওয়ার ফলে এক বছরেও বেশি টিকে না। ফলে বছরে বছরে ঠিক করতে হয়। পারাপারে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে। যেকোনো মূহুর্তে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।
এই বিষয়ে স্থানীয় মেম্বার ওমর ফারুক জানান, কাঠের ব্রীজ হলে প্রতি বছর ঠিক করতে হয়। এজন্য এসময়ে একটি পাকা ব্রীজ নির্মাণ করলে একেবারে স্থানীয় সমাধান হবে। বাজেটের তেমন প্রয়োজন হবে না। বিগত সময়ে যে পাকা ব্রীজটি নির্মাণে ভুল পরিকল্পনা ছিলো। কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি পেলে যে ব্রীজটি পানির নীচে তলিয়ে যায় সে ধারণা তাদের জানা ছিলো না। এজন্য এক জায়গায় দুটি ব্রীজ হলেও সঠিক সমাধান এখনো হচ্ছে না।
এই বিষয়ে বিলাইছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম জানান,ডরমিটরি টু বিলাইছড়ি স্কুল সংযোগকারী এই ব্রীজটা আমি মনে করি বিলাইছড়ির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্রীজ। এই ব্রীজ হয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ছাত্র – ছাত্রী বিদ্যালয়ে আসে অথচ এই ব্রীজটা বর্তমানে এমন অবস্থায় আছে যে যেকোনো সময় শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভেঙে পড়ে যেতে পারে। এই ব্রীজের উত্তর পাশে শুরুতে কাঠের অনেকগুলো খন্ড পড়ে গেছে। আবার কিছু কিছু অংশকে ধারণকারী খুঁটি ও বিম এমন ভঙ্গুর যে বিদ্যমান পাঠাতন গুলোকে নিয়ে নিচে পড়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের জীবন ঝুঁকি ঘটাতে পারে। এমনকি জীবন নাশও হতে পারে।
তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এই বিষয়ে দৃষ্টিপাত কামনা করছি আর এই ব্রীজটি যদি চলাচল বন্ধ হয়ে যায় তখন ১০ মিনিটের এই পথ শিক্ষার্থীদেরকে দুই মাইল হয়ে আসতে হবে যেটা শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক সমস্যা সংকুল। এই কারণে সুজন দা কে পেয়ে আমি খুশি হলাম তাই বলছিলাম যদি সম্ভব হয় এই ব্রীজটা করা গেলে এই ব্রীজ হয়ে অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে আসতে পারবে আর যদি ব্রীজটা পাকা হয় তখন এইদিকে শিক্ষার্থী ব্যতীত অনেক পথিক, সরকারি কর্মকর্তা, বেসরকারি কর্মকর্তা এই পথ ধরে অফিসে কলেজে যেতে পারবে । তাই এই পথ ধরে চলাচলকারী সকল পথিক কর্মকর্তা কর্মচারী শিক্ষক শত শত শিক্ষার্থী সবার পক্ষে আমাদের স্থানীয় পত্রিকার মাধ্যমে ব্রীজটিকে পাকা করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি দেওয়ান জানান, উপজেলা বরাদ্দ দিয়ে করলে বছরে অর্ধেক বরাদ্দ সেখানে লাগতে পারে। বাকী উন্নয়ন কি করবো। এজন্য ব্রীজটি নির্মাণ করতে জেলা পরিষদ নতুবা উন্নয়ন বোর্ডের সুদৃষ্টি প্রয়োজন। তবে ব্রীজটি নির্মাণে অতীব গুরুত্বপূর্ণ। তাই উর্ধ্বতন কর্তুপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
উপজেলা প্রকৌশলী আলতাফ হোসেন জানান, প্রজেক্টে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে আছে, পূর্ণাঙ্গ পাশ হলে তখন হবে। নির্মাণে প্রক্রিয়াধীন আছে । টাকা বরাদ্দ আসলে করে দেওয়া হবে। ৬০ মিটার দৈর্ঘ্য। প্রতিদিন শিক্ষার্থীসহ হাজার মানুষ পার হয়। আমি যেখানে থাকি আমার পাশে। আমি জানি। দ্রুত নির্মাণ কারার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
