
বিশেষ প্রতিনিধি, বান্দরবান :
বান্দরবান মারমা বাজারে জুমে উৎপাদিত কৃষিপণ্য বিক্রেতাদেরকে টোল-ট্যাক্স না দিতে অনুরোধ করেছেন বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাজার ফান্ড প্রশাসক অধ্যাপক থানজামা লুসাই।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে মারমা বাজার পরিদর্শনকালে তিনি বিক্রেতাদের সঙ্গে আলাপকালে এই আহ্বান জানান। তবে তার এমন নির্দেশনা সত্ত্বেও বাজার ইজারাদারের প্রতিনিধি নির্বিঘ্নে টোল-ট্যাক্স আদায় করে যাচ্ছেন।
জেলা পরিষদের অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে মারমা বাজার থেকে টোল-ট্যাক্স তোলার জন্য টেন্ডার পেয়েছেন মেসার্স মিল্টন ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মাও সেতুং তঞ্চঙ্গ্যা। তিনি আদায়কারী হিসেবে নিয়োগ দেন মো. আব্দুল মাবুদকে। পরে আব্দুল মাবুদ টোল আদায়ের দায়িত্ব দেন চসা মং মারমা (বাবু) নামে আরেকজনকে। তবে এখনো বাজার ফান্ড থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে টোল আদায়ের কোনো অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
এ অবস্থায় চসা মং মারমা বাজারে বসে টোল তুলছেন। তিনি জানান—এক গাড়ি কলা ছড়ার জন্য দেড় হাজার টাকা,এক গাড়িতে ৬–৭ শ’ কলার ছড়ি বহন করা যায়। জুমে উৎপাদিত মারফা শসা প্রতি মণ ২০ টাকা,শুকনা হলুদ প্রতি মণ ১২০ টাকা, বরবটি প্রতি মণ ২০ টাকা,আদা প্রতি মণ ৩০ টাকা এভাবেই কৃষিপণ্যের ওপর টোল ধার্য করে আদায় করা হচ্ছে।
তারাছা থেকে আগত জুমে উৎপাদিত কৃষিপণ্য বিক্রেতা থুইনু প্রু (৫০) বলেন, “প্রতি বাজারবারে আমাকে ৫০ টাকা টোল দিতে হয়। আজ বুধবারও দিয়েছি।” একই অভিযোগ করেন বাঘমারা থেকে আসা সামাচিং মারমা (৫৫)। তিনি জানান, “প্রতি বাজারবারে ৪০ টাকা করে টোল দিতে হয়। আজও দিয়েছি। তবে চেয়ারম্যান যেহেতু সরাসরি এসে বলেছেন টোল না দিতে, তাই ভবিষ্যতে আর দেব না।”
এদিকে মারমা বাজারে পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের উদ্দেশে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই বলেন, “মারমা বাজার বাজার ফান্ডের আওতাভুক্ত নয়। তাই বাজার ফান্ডের ইজারাদারের এখান থেকে টোল আদায়ের কোনো অধিকার নেই। বিক্রেতাদের কাছ থেকে টোল-ট্যাক্স নেওয়া বন্ধ করতে হবে।”
মারমা বাজার পরিদর্শনে চেয়ারম্যানের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কেএস মং, জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী পরাক্রম চাকমা, ডা. মং উষাথোয়াই, ক্য সা মং মারমা, উছো মং মারমা, চনুমং মারমা, নারী নেত্রী কৃপা ত্রিপুরা প্রমুখ।