।।আকাশ মারমা মংসিং, বান্দরবান।।
খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে পাহাড়ি বাঙালি সংহিসতা জেড় ধরে তিন পার্বত্য জেলায় ভ্রমণ না করতে অনুরোধ জানানো হয় পর্যটকদের প্রতি। কিন্তু সেই অনুরোধ অমান্য করে চারদিন ছুটিতে বান্দরবানে প্রবেশ করছেন কয়েকগুটি পর্যটকরা। বান্দরবানে পর্যটকদের ভ্রমণের অনুরোধ জানালেও মানছেন নাহ পর্যটকরা। ফলে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে এর দায় কে নিবে এমন প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
এদিকে গেল ৬ অক্টোবর রবিবার বিকালে তিন পার্বত্য জেলায় অনিবার্য কারণবশত পর্যটকদের ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানান জেলা প্রশাসন। প্রশাসন থেকে বলা হয় ৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় ২৪ দিন পর্যটকরা ভ্রমণ করা যাবে নাহ তিন পার্বত্য জেলায়। কিন্তু এই অনুরোধ করার পর মানা হচ্ছে নাহ আইন। বরংচ বিভিন্ন জেলা থেকে ও পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে ছুটে আসছেন পর্যটকরা।
শহরে কাছে একমাত্র পর্যটন কেন্দ্র মেঘলা, নিলাচল ও শৈলপ্রপাত। কাছে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বিভিন্ন জেলা থেকে গুটি কয়েক পর্যটকদের আনাগোনা দেখা গেছে। নিলাচল ও মেঘলাতে একদিনে টিকিট বিক্রি হয়েছে ১৫০টি মতন। কুমিল্লা ফেনি, মৌলভীবাজার, দিনাজপুর পার্শ্ববর্তী জেলা চট্টগ্রাম থেকে এসেছে দলবদ্ধভাবে আবার পরিবার পরিজনদের নিয়ে। প্রতিটি পর্যটন কেন্দ্রে নাই কোন ট্যুরিস্ট পুলিশের টহল। পর্যটকদের কোন অঘটন ঘটলে সেসব দায়ভার কে নিবে সে বিষয়ে জানেন নাহ সংশ্লিষ্টরা।
১৩ জন বন্ধু নিয়ে ফেনী থেকে বান্দরবান ভ্রমণে এসেছেন মাইন উদ্দিন। তিনি বলেন, বান্দরবান ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা বিষয়টি জানেন না। চেকপোস্টে ন্যাশনাল আইডি কার্ড দেখিয়ে এসেছেন। তখনও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও পুলিশ সদস্যরাও নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি অবগত করেননি বলে জানান।
হাবিবুর রহমান শহীদ সিলেট মৌলভীবাজার থেকে সপরিবার নিয়ে বান্দরবানে ঘুরতে এসেছেন। তিনি বলেন, পর্যটন সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ বা সরকারি প্রশাসনের বিধিনিষেধ মানা উচিৎ। আমরা পর্যটকেরা এসে গেছি আত্মীয় স্বজনদের কাছে আছি। মনের আবেগে হয়তো চলে এসেছি কিন্তু আমাদেরও সচেতন থাকা দরকার।
রাজশাহী থেকে ৩০ জনের একটা টিম নিয়ে বান্দরবান ভ্রমণে এসেছেন। তাদের মধ্যে কচিম উদ্দিন বলেন, রাজশাহী থেকে গতকাল (৯ অক্টোবর) বান্দরবানে এসেছেন। নীলাচল, মেঘলা ও গোল্ডেন টেম্পল ঘুরে চলে যাবেন।
নীলাচল ও মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রে টিকিট কাউন্টারে দায়িত্বে থাকা সুমি ত্রিপুরা ও সুকুমার তংচংগ্যা বলেন, সারাদিনে ১শো’র মত টিকিট বিক্রি করেছি। পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদেরকে সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি বলে জানান।
বান্দরবান টুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার আপেল মাহমুদ বলেন, তিন পার্বত্য জেলায় পর্যটক ভ্রমণে বিরত থাকবে বলা হয়েছে। তারপরও যদি পর্যটক ভ্রমণে এসেছে থাকে, মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রে আমাদের পুলিশ টিম পাঠাচ্ছি যাতে পর্যটন কেন্দ্রে থাকা পর্যটকদের সসম্মানে ফিরিয়ে দিতে। একই সাথে বান্দরবান টুরিস্ট পুলিশ সতর্ক অবস্থানে থাকবে যাতে বান্দরবানে পর্যটক ভ্রমণে আসতে না পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন এক ক্ষুদে বার্তায় জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল পর্যটকদের বান্দরবান ভ্রমণে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়েছে। সকল বাহিনী এ বিষয়ে অবহিত রয়েছে। বান্দরবানে পর্যটক ভ্রমণে এসেছে এ বিষয়ে অবগত হলাম।