উচ্চপ্রু মারমা।।রাজস্থলী।।
রাঙ্গামাটি রাজস্থলী উপজেলা বাঙ্গালহালিয়া বাজার সাপ্তাহিক বাজারে পাহাড়ি-বাঙালিদের এক মিলন মেলায় পরিণত হয় । যেখানে প্রতি সপ্তাহ মঙ্গলবার ভোরে হাট বসে চলে বিকাল পর্যন্ত। রাজস্থলী উপজেলা ছাড়াও শত শত মাইল দূর থেকে ক্রেতা-বিক্রেতারা এই হাটে ছুটে আসেন। অনেকে রাত ৩টা থেকে শুরু করে বাঙ্গালহালিয়া বাজার চলে আসেন। তবে রাজস্থলী উপজেলা ছাড়াও বিভিন্ন স্থান থেকে বান্দরবান জেলা অধিকাংশ মানুষ আশেপাশে বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ঘণ্টার পর ঘন্টা মাধ্যমে তরতাজা শাক-সবজি, ফলমূলসহ বিভিন্ন কলা পেঁপে ফল ধান ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে এখানে ছুটে আসেন মানুষ।
শনিবার (১০ ডিসেম্বর ) বাঙ্গালহালিয়া সাপ্তাহিক হাটে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভোর থেকে আসতে থাকা ক্রেতা-বিক্রেতার আগমণে মুখরিত বাঙ্গালহালিয়া মেইনরোডে বাজার। ঠিক ভোরের আলো ফুটতেই হাজার হাজার ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগমে ভরপুর হয় এই হাট। যেখানে পাহাড়ি ও বাঙালি ক্রেতা-বিক্রেতাদের মিলন মেলায় পরিণত হয় এই হাট। হাটে হরেক প্রকারের শাক-সবজি, ফলমূল ছাড়াও হাঁস মুরগির ধান ,মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সবকিছুর দেখা মেলে এখানে। কিছু কিছু জায়গায় দেখা গেছে, পাহাড়ি ক্রেতারা বাঙালিদের কাছ থেকে জিনিসপত্র কিনছে আবার বাঙালি ক্রেতারা পাহাড়ি বিক্রেতাদের কাছে পণ্য ক্রয় করছে। এ যেন পাহাড়ি বাঙালির সম্প্রীতির এক মেলবন্ধন।
তবে বাঙ্গালহালিয়া বাজারে সাধারণত পাহাড়ি নারীদেরই পণ্য বিক্রি করতে বেশি দেখা যায়। পুরুষরা গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজ না থাকলে হাটে না এসে গ্রামেই বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকেন। তাই নারীরাই বেশিরভাগ খেতে জুম থেকে পণ্য নিয়ে একটি বোটে গ্রামের ২০-৩০ জন মিলে হাটে আসেন। প্রতিটি গ্রাম থেকে সাধারণ পাহাড়িরা বাজারে বিভিন্ন তরি তরকারি নিয়ে বাজার হাটের চলে আসে।।
বাঙ্গালহালিয়া বাজার সাপ্তাহিক এই হাটে অধিকাংশ পণ্য আসে । তাই দূর-দুরান্ত থেকে আসা বিভিন্ন পণ্য নিয়ে বাজারে ভিড় । অনেক সময় বিক্রেতারা বাজারে সময়ের অর্ধেকে মালামাল কেনা-বেচা হয়ে যায়। সেখান থেকে পণ্য কিনে পাইকারি ক্রেতারা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি করে থাকে। পাশাপাশি বাঙ্গালহালিয়া বাজার সাপ্তাহিক হাটে ইজারার মাধ্যমে সরকারের পরিমাণের রাজস্ব আয় করে।
যারা দূর-দূরান্ত থেকে আসা ক্রেতারা জানান, সাপ্তাহিক এই বাজার হাটে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করে থাকেন। বহু বছর ধরে তারা পণ্য নিয়ে এখানে আসেন। পণ্য বিক্রি করে কমবেশি সবাই লাভবান হয়। ঐতিহ্যবাহী এই হাটে পণ্য বিক্রি করে অনেকের সংসার চলে। গাড়ি করে খরচ বেশি হলে সাপ্তাহিক এই হাটে ছুটে আসে মানুষ।
তিনি আরো জানান,,বাজারের পণ্যগুলোর মূল বিশেষত্ব হলো ভেজালমুক্ত। এখানে বিক্রি হওয়া প্রায় প্রতিটি শাক-সবজি, ফল-মূল, মাছ-মাংসে কোনো ধরনের ভেজাল মিশানো হয় না। পাশাপাশি সবকিছুতেই তাজা পাওয়া যায়। হাটের দিনগুলোতে নানা ধরনের তাজা শাক-সবজির পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের চাল, আদা, হলুদসহ বিভিন্ন মশলাও পাওয়া যায়। এই বাজারটি পাহাড়ি -বাঙালি একটি মিলনমেলাও বটে।
চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসার ব্যবসায়ীরা জানান, বাঙ্গালহালিয়া বাজারহাটে একদিন আগেই অনেকে চলে আসেন। আবার অনেকে রাতে রওনা দিয়ে ভোরে এই হাটে আসেন। এখানে কম দামে তরতাজা তরকারি, ফলমূল পাওয়া যায়। সেকারণেই দূর থেকে ক্রেতারা এখানে আসেন। বাঙ্গালহালিয়া বাজারের পণ্যগুলো দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ পাহাড়ে উৎপাদিত এসব ফসল শহরাঞ্চলের মানুষের কাছে পৌঁছে যায়।
বাজার সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন,, রাঙ্গামাটি রাজস্থলী উপজেলা মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালহালিয়া বাজারটি ঐতিহ্যবাহী হাট বাজার ,এই বাজারে , রাজস্থলী, বান্দরবান, চন্দ্রঘোনা, রাঙ্গুনিয়া, বিভিন্ন এলাকা থেকে সাপ্তাহিক এই বাজার হাট থেকে কেনাকাটা করা হয়। এই বাজারে বিভিন্ন শাক সবজির , মাছ, মাংস, বিভিন্ন পণ্য পাওয়া যায় আমাদের বাজারটা হল নিয়ন্ত্রণে বাজার, বাঙ্গালহালিয়া বাজারটি শান্তিপূর্ণ বাজার এই বাজারের সার্বক্ষণিক ভাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী , ও পুলিশ ফারিং, সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়। এবং এই বাঙালহালিয়া বাজার থেকে প্রতি বছরে সরকারে ১০-১২ লাখ টাকা রাজস্ব শুল্ককর আদায় করে।।