বন্যাহাতি তান্ডব; নিরাপদ আশ্রয়ে যাচ্ছে কয়েক পরিবার!

0
105

উচ্চপ্রু মারমা।। রাজস্থলী।।

রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলার দুই নং গাইন্দ্যা ইউনিয়নের তুলাছড়ি পাড়ায় একদল বন্যহাতি রাতব্যাপী তাণ্ডব চালিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে। হাতির আক্রমণ থেকে জানমাল রক্ষা করতে পাহাড়ঘেঁষা গ্রামের মানুষ বসতবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছে। বন্যহাতির টানা আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছে স্থানীয়রা।

রবিবার ভোর রাএে (২ জুন ) উপজেলার দুই নং গাইন্দ্যা ইউনিয়নের তুলাছড়ি পাড়া গ্রামে খাবারের সন্ধানে একদল বন্যহাতি রাতভর ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। এ সময় প্রায় ১০ থেকে ১২টি বন্যহাতির দল বসতবাড়িতে ঢুকে ঘরবাড়ি ভেঙে ধান-চাল খেয়ে সাবাড় করে ফেলে। পাশাপাশি গাছের কাঁঠাল এবং বাড়ির আঙিনায় রোপিত কলাগাছও খেয়ে ফেলে। এমনকি ঘরে রাখা ধান-চাল ও আসবাবপত্র তছনছ করে দেয়। ওই রাতে অন্তত ২ থেকে ৪ টি পরিবারের বাড়িঘরে তাণ্ডব চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতি করেছে।তারা হলেন মিয়াদন তনচংগ্যার ও পিন্টু তনচংগ্যার ঘরবাড়ী। প্রায় ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা জানান।

ভুক্তভোগীরা জানান, সম্প্রতি বোরো ধানের আবাদ শেষ হয়েছে। ফলে হাতিগুলো এখন আর খেত থেকে খাবার পাচ্ছে না। তাই তারা গ্রামে ঢুকে ঘরবাড়িতে হানা দিচ্ছে এবং সংরক্ষিত ধান-চাল খেয়ে নিচ্ছে। বর্তমানে বৃষ্টিপাত থাকায় গ্রামবাসী হাতি তাড়াতে পারছে না। আর তাড়াতে গেলে হাতি ক্ষিপ্ত হয়ে মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। আগে শুধু পাহাড়ঘেঁষা বাড়িঘরে হামলা করত হাতি, কিন্তু এখন তারা গ্রামের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ছে।

অন্যদিকে, বন্যহাতির হামলা ঠেকাতে উপজেলার বিমাছড়া, তুলাছড়ি, আমছড়া পাড়া গ্রামের বাসিন্দারা বাড়ির আঙিনার ছোট-বড় গাছপালা কেটে ফেলেছেন। তারা দলবেঁধে রাত জেগে বন্যহাতির পাহারা দিচ্ছেন। গাইন্দ্যা ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নং ওয়ার্ডের মেম্বার লামুচিং মারমা বলেন, বন্যহাতির তান্ডবে আমার ওয়ার্ডের নিরহ মানুষদের ঘরবাড়ী তছনচ করেছে। আমি সাথে সাথে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টি জানাইছি। তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে বন বিভাগে দেওয়ার জন্য বলেন।

গাইন্দ্যা ইউনিয়নের তুলাছড়ি পাড়া গ্রামের বাসিন্দা কিনামন বলেন, “হাতি তাড়ানোর জন্য আমাদের পর্যাপ্ত ডিজেল ও সার্চলাইট নেই। আমরা এখন চরম আতঙ্কে আছি। একদিকে বৃষ্টি, আরেকদিকে অন্ধকার রাত—হাতির ভয় নিয়ে রাত পার করছি। আমাদের এলাকায় যেন প্রাকৃতিক দুর্যোগ নেমে এসেছে। আমরা এই সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান চাই। এ বিষয়ে কাপ্তাই পাল্পউড বাগান বিভাগের রাজস্থলী ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা তুহিনুল হক বলেন, “বন্যহাতির দ্বারা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে সরকার নির্ধারিত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। পাশাপাশি হাতি ও মানুষের উভয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।

রাজস্থলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজীব কান্তি রুদ্র বলেন, “বন্যহাতির দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাম পরিদর্শন করেছি। তারা আমার বরাবরে ক্ষতিপূরণ ছেয়ে আবেদন করেছে আমি বিষয়টি জেলাপ্রশাসকের বরাবরে প্রেরণ করেছি। দ্রুত তারা সাহায্য সহযোগিতা পাবে। এছাড়া বন বিভাগের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তরা আবেদন করলে সরকারিভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here