।।আকাশ মারমা মংসিং বান্দরবান।।
কদিন পরেই শুরু হচ্ছে ঈদ। টানা ঈদের ছুটিতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নৈসর্গিক ভরা বান্দরবান জেলাটিতে পর্যটন মৌসুমে ৭২টি কেন্দ্রগুলোতে উপচে পড়া ভীড় থাকে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পর্যটকদের। কিন্তু এই ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের আগমন নিয়ে চিন্তার ভাজ পড়েছে পর্যটন সাথে জড়িত থাকা সংশ্লিষ্টদের। তাছাড়া দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ের নানা অস্থিরতা ও যৌথ অভিযানে ফলে পর্যটক না আসায় মানবেতর জীবন ও অলস সময় পাড় করছেন ব্যবসায়ী, গাড়ি চালক ও দোকান ব্যবসায়ীসহ এই শিল্পের জড়িত থাকা সংশ্লিষ্টরা। শুধু তাই নয় টানা ঈদের ছুটিতে আশানুরূপ পর্যটক সাড়া না পাওয়াই ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছেন বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা।
গত ২ ও ৩ এপ্রিল রুমা ও থানচিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতি, ব্যাংক ব্যবস্থাপকে অপহরণ, টাকা লুট ও পুলিশ-আনসারের ১৪টি অস্ত্র ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। জেলাটিতে সন্ত্রাসীদের তৎপরতা বেড়ে যাওয়া ও অস্ত্র উদ্ধারসহ সন্ত্রাসীদের নির্মুল করতে পাহাড়ের চলছে যৌথবাহিনী সাড়াশি অভিযান। টানা এই অভিযানে বন্ধ রয়েছে রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানচি তিন উপজেলার পর্যটন কেন্দ্র। তবে তিন উপজেলার ব্যাতীত অনান্য চার উপজেলার পর্যটন কেন্দ্র খোলা থাকলেও তেমন পাড়ি জমান নাহ পর্যটকরা। যার ফলে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়ার কারণে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে শতাধিক হোটেল মোটেল, জিপ মালিক সহ সাধারণ ব্যবসায়ীরা।
বান্দরবানে নীলাচল,মেঘলা, নীলগিরিসহ ৭২টি পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। হোটেল মোটেল, ট্যুরিস্ট গাইড ও চান্দের গাড়ি চালক রয়েছে প্রায় শতাধিক। তার মধ্যে পর্যটন কেন্দ্র খোলা রয়েছে ৩০টির অধিক। সেসব পর্যটনকেন্দ্র প্রায় শহরে কাছাকাছি। তবুও সেখানে নাই পর্যটকদের আনাগোনা শুন্য পড়েছে সেসব স্থান। গুটি কয়েক পর্যটক আসলেও দিনশেষে ফিরে যান নিজ শহরে। এছাড়াও হোটেল- মোটেল ও চান্দের গাড়ি সংখ্যা শতাধিক থাকলেও পর্যটক শুন্য হয়ে পড়ায় অলসতা সময় পাড় করছেন চালক,ট্যুরিস্ট গাইড ও হোটেলসহ সাধারণ ব্যবসায়ীরা।
পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পাহাড়ের নানা সমস্যা কারণে হোটেল- মোটেল প্রায় শুন্য। গত বছরের কয়েকগুটি বুকিং থাকলেও এবার ঈদের তেমন বুকিং নাই বললেই চলে। অর্থ উপার্জন পথ বন্ধ হয়ে পড়াতেই কর্মচারিদের ছাটাই ও করেছেন মালিক পক্ষরা। অন্যদিকে পর্যটক না থাকায় ট্যুরিস্ট গাইড ও গাড়ি চালকরা দুর্ভিক্ষ দিন কাটাচ্ছেন। দীর্ঘদীন ধরে উপার্জনে পথ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে অনেকেই। তবে পাহাড়ের সন্ত্রাসী নির্মূল করে দ্রুত খুলে দেয়ার দাবী জানান তারা।
হোটেল গার্ডেন সিটি মালিক জাফর বলেন, পাহাড়ের বিভিন্ন সমস্যা কারণে হোটেলে তেমন বুকিং হচ্ছে নাহ। এভাবে চললে ব্যবসা ছেড়ে দেওয়া ছাড়া আর কোন উপায় দেখছি নাহ।
পুরবী মার্কেট সাধারণ ব্যবসায়ী হ্লায়ই রাখাইন বলেন, এবার ঈদের পর্যটকরা আসবে কীনা এখন জানি নাহ। আর কতদিন দোকানে জিনিসপত্র সাজিয়ে রাখবো।
চান্দের গাড়ি চালক খায়ের বলেন, পর্যটক না থাকায় দিনের পর দিন বসে থাকতে হচ্ছে। তাছাড়া এই সমস্যা কারণে পরিবারের অভাব অনটন বেড়ে যাচ্ছে।
ট্যুরিষ্ট গাইডের সাধারণ সম্পাদক মামুন বলেন, তিন উপজেলার মিলে পর্যটকদের সংখ্যা শতাধিক রয়েছে। পাহাড়ের প্রতিবন্ধকতা কারণে গাইডরা বেকারের দিন কাটচ্ছেন। তাই দ্রুত পর্যটক কেন্দ্রগুলো খুলে দেয়া দাবী জানাই।
জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, পাহাড়ের যৌথ বাহিনী অভিযানে কারণে পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। তবে তিন উপজেলা ছাড়া অনান্য পর্যটন কেন্দ্রগুলো খোলা রয়েছে। সেসব পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটকদের নিরাপত্তা স্বার্থে প্রত্যেকটি স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রয়েছে। তবে যেসব স্থানে অভিযান চলমান রয়েছে সেসব এলাকায় এড়িয়ে চলার জন্য চকলের প্রতি আহ্বান জানান এই কর্মকর্তা।