থানচিতে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশ

0
34

।। বান্দরবান প্রতিনিধি।। 

আন্তর্বতীকালীন সরকার দেশ সংস্কারে সকল দুর্নীতি, অনিয়ম, অসাধু ব্যবসায়ীদের দ্বারা বালু, পাথর উত্তোলন, অবৈধ গাছ, বাঁশ কর্তন বন্ধ করা এবং উন্নত শিক্ষা, চিকিৎসা ব্যবস্থাসহ ১১ দফা দাবিতে বান্দরবানে থানচিতে বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় বাসষ্টেশন এলাকায় থেকে থানচি আদিবাসী ছাত্র ও যুব সমাজের আয়োজনে প্রধান প্রধান সড়কের বিক্ষোভ মিছিলের সাঙ্গু নদীর সেতু ত্রি-মুখে শতাধিক ছাত্র ও যুব সমাজের লোকজন অবস্থান নেন। পরে সমাজ সেবক ও সমন্বয়ক উথোয়াই ওয়াং মারমা সভাপতিত্বে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে স্বাগতম বক্তব্য রাখেন, ম্যাসিং ওয়াং মারমা। এরপরে সমন্বয়ক মংসিংশৈ মারমা, সমন্বয়ক মংমে মারমা, সিংনয়া ম্রো, রেংহাই ম্রো, সিংওয়াই মং মারমা, অনন্ত ত্রিপুরা, শৈচমং মারমা, থংলে খুমী, মুক্তচন্দ্র ত্রিপুরা প্রমুখ গণসমাবেশের বক্তব্য প্রদান করেছেন। এসময় উপজেলায় আদিবাসী ছাত্র ও যুব সমাজের বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এসময় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের পূর্ব-দক্ষিণে সীমান্তে দুর্গম উপজেলার থানচি। এই উপজেলায় গত ১৫ বছর ধরে একদিকে স্বৈরাচারী শাসক গোষ্ঠী ক্ষমতা আমলে সকল সরকারি বেসরকারি দপ্তরের দুর্নীতি গ্রস্থ ও স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা পাথর, বালু উত্তোলন, গাছ, বাঁশ কর্তন করে পরিবেশ ধ্বংস কাজে লিপ্ত।

অন্যদিকে দুর্গম ও সীমান্তে থানচি, রুমা, রোয়াংছড়ি উপজেলা গুলোতে কেএনএফ সন্ত্রাসীদের দমনের নামে “বাজার দ্রব্য বেচা-কেনা উপর নিষেধাজ্ঞার” সহ আইন শৃঙ্খলা নামের ক্ষেতে খাওয়া সাধারণ জনগণের উপর হয়রানি মূলক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে।

বক্তারা আরো বলেন, দেশের ছাত্র-আন্দোলনে মাধ্যমে গত ৫ই আগষ্টের স্বৈরাচারী শাসক গোষ্ঠী ক্ষমতা পতনের পরে দেশ যখন পূনঃউদ্ধারে সংস্কার কাজে মরিয়া তখন গত ৫ই সেপ্টেম্বর থেকে উপজেলায় সর্বস্থরে মানুষের বাজারে চাউল, ডাল, লবণ ইত্যাদি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র ক্রয় করার জন্য নিধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশ কর্মসূচির পরিশেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাধ্যমে আন্তর্বতীকালীন সরকারে প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে স্মারক লিপি প্রদান করা হয়েছে।

এই বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশ কর্মসূচিতে সাধারণ জনগণের পক্ষে ১১ দফা দাবি জানিয়েছে আদিবাসী ছাত্র ও যুব সমাজ।

১.থানচি উপজেলা সকল সরকারি বেসরকারি অফিসে দুর্নীতি তদন্ত করে দোষীদের আইনে আওতায় আনতে হবে। এবং দোষীসাব্যস্থ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অপসারণ করতে হবে।

২. পাথর, বালু উত্তোলন ও গাছ, বাঁশ কর্তন বন্ধ করতে হবে। এবং এ সমস্ত কর্মকান্ডে জড়িত অসাধু ব্যবসায়ীদের তদন্ত করে আইনে আওতায় আনতে হবে।

৩.থানচি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের শূন্য পদের পর্যাপ্তমানে শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।

৪.পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনীতি মামলায় গ্রেপ্তারকৃত রাজবন্দিদের নিঃশর্ত মুক্তি ও সকল হয়রানি মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। এবং অচিরেই মিথ্যা মামলা দেওয়া বন্ধ করতে হবে।

৫.কেএনএফ নামে সাধারণ জনগণের বাজার সামগ্রিক ক্রয়-বিক্রয়ের বিজিবি কর্তৃক বাঁধা প্রদান বন্ধ করতে হবে।

৬.তিন পাবর্ত্য জেলা সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্ব-স্ব মাতৃভাষা শিক্ষা ব্যবস্থা ও দক্ষ শিক্ষকের নিয়োগ দিতে হবে।

৭.থানচি বাজার ও বলিপাড়া বাজারে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। এই দু,টি বাজারে বাজার পরিচালনা কমিটি পাহাড়ি বাঙালি সমন্বয় করে কমিটি গঠন করতে হবে।

৮.থানচি-বান্দরবান সড়কের যাত্রী পরিবহনে ফিটনেসবিহীন গাড়ি ব্যবহারে বন্ধ করতে হবে। এবং ন্যায্য মূল্য ভাড়া নির্ধারণ ও কোন নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দকৃত সিটগুলো বাতিল করে বৈষম্য মুক্ত করে দিতে হবে।

৯. থানচি উপজেলা একমাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এর ইনডোর চালুকরণে ও চিকিৎসার বিজ্ঞানের পর্যাপ্তমানে সরঞ্জাম ও দক্ষ চিকিৎসক নিয়োগ দিতে হবে।

১০. পর্যটন শিল্পের স্থানীয় পাহাড়ি-বাঙালি বেকার শিক্ষিত যুবকদের পর্যটন গাইড হিসেব নিয়োগ দিতে হবে।

১১.থানচি উপজেলা বিভিন্ন স্থাপনা বিকৃত নাম বাতিল করে স্থানীয়দের পরামর্শে ঐতিহাসিক নামগুলো গেজেটে নাম ব্যবহার করতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here