
সুশান্ত কান্তি তঞ্চঙ্গ্যাঁ।।আলীকদম।।
বান্দরবানের লামা বন বিভাগের মাতামুহুরী রেঞ্জের বাঁশ মহাল নিলাম না হওয়ায় চলতি অর্থ বছরে সরকার প্রায় কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে। অর্থ বছরের শেষ প্রান্তে এসেও বাঁশ মহাল নিলাম না হওয়ায় এই অর্থ বছরে আর নিলাম হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানাগেছে।
মাতামুহুরী রিজার্ভ এলাকায় বাঁশ মহাল নিলামের জন্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক ওয়াকিং প্লান অনুমোদন না আসায় নিলাম প্রদান করা যাচ্ছে না বলে জানাগেছে।
বাঁশ মহাল নিলাম না হলেও একটি চক্র মাতামুহুরী রেঞ্জ হইতে অবৈধ ভাবে বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশ আহরণ করে পাচার অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় বাঁশ ব্যবসায়ী আবুল হাসেম বলেন, প্রচলিত বাঁশ মহাল নিলামে কঠিন শর্তের কারণে ক্ষুদ্র বাঁশ ব্যবসায়ীরা অংশ নিতে পারে না। এতে গুটিকয়েক ব্যক্তিই লাভবান হয়। নিলাম না দিয়ে দাখিলা (টিপি)’র মাধ্যমে বাঁশ সরবরাহ করে সরকার আরো বেশী রাজস্ব পাবে।
দুর্গম এলাকার বাঁশ শ্রমিক মেনচিং মুরুং,ক্যনুমং মার্মা ও লক্ষিজন ত্রিপুরা বলেন, বিশাল এ বন ভূমির আনাছে-কানাছে সু-দীর্ঘকাল থেকে বসবাস করছে মুরুং,মার্মা,ত্রিপুরা,তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠীরা। এসব জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি বাঙ্গালিরা মাতামুহুরী রেঞ্জের বাঁশ শ্রমিক হিসেবে কাজ করে রুজি- রোজগার করে। বাঁশমহাল নিলামের নামে বাঁশ শ্রমিকরা নিলাম গ্রহীতাদের কাছে দায়বদ্ধ হয়ে পড়ে। নিলাম না দিয়ে দাখিলার মাধ্যমে বাঁশ সরবরাহ করা হলে সরকারের পাশাপাশি তারাও উপকৃত হবে। এদিকে, বাঁশ মহাল নিলাম বন্ধ থাকলেও থেমে নেই সরকারি বনাঞ্চল থেকে বাঁশ আহরণ।
জানাগেছে, বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ সংরক্ষিত বনাঞ্চল মাতামুহুরী রেঞ্জ। ১ লক্ষ ২ হাজার একর জায়গা নিয়ে ব্রিটিশ আমল থেকে এই সংরক্ষিত বনাঞ্চল সৃষ্টি হয়েছে। গত বছর এই সংরক্ষিত বনে উৎপাদিত বাঁশ নিলাম দিয়ে বন বিভাগ প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা রাজস্ব আয় করেছে।
প্রতিবছর এই সংরক্ষিত বনের বাঁশ মহাল নিলাম দিয়ে বন বিভাগ কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে। চলতি অর্থ বছরের এপ্রিল মাস শেষ হলেও লামা বন বিভাগ এই বাঁশ মহাল নিলাম দেয়নি। গত অর্থ বছরের নিলামের দাখিলা দিয়ে গত বছর ডিসেম্বর পর্যন্ত বাঁশের ঢিপি প্রদান করা হয়েছে।
মাতামুহুরী রিজার্ভ সংর-ক্ষিত বনে বসবাসরত মাংক্রাক মুরুং জানিয়েছেন,জুম চাষের কারণে লক্ষ লক্ষ বাঁশ পুঁড়িয়ে ফেলা হয়েছে। আবার বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা মাতামুহুরী সংরক্ষিত বনাঞ্চল হইতে বাঁশ আহরণ করে অবৈধ ভাবে পাচার করছে বলে জানান।
লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, প্রতি ০৩ বছর পর পর মাতামুহুরী সংরক্ষিত বনের বাঁশ মহাল নিলামের জন্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক ওয়ার্কিং প্লান অনুমোদন নিতে হয়। ওয়ার্কিং প্লান অনুমোদনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় চলতি অর্থ বছরের বাঁশ মহাল নিলামের জন্য পুনরায় ওয়ার্কিং প্লানের অনুমোদন চেয়ে অধিদপ্তরে চিঠি চালাচালি চলছে। অধিদপ্তরের অনুমোদন ফেলে বাঁশ মহাল নিলাম প্রদান করা হবে।