আলীকদমে মাতামুহুরী নদীতে ও তৈন খালে ফুল ভাসিয়ে বিষু-বিজু উৎসব শুরু

0
180

সুশান্ত কান্তি তঞ্চঙ্গ্যাঁ।।আলীকদম।।

মাতামুহূরী নদী-তৈনখালে জলবুদ্ধ ও মা- গঙ্গাদেবীকে ফুল নিবেদন ফুল দিয়ে জলবুদ্ধ ও মা গঙ্গাদেবীর পূজা এবং ক্ষমা প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শুরু হলো বান্দরবানের আলীকদমে সর্ববৃহৎ সামাজিক উৎসব বিষু-বিজু।

শনিবার (১২ এপ্রিল) সকাল ৭টায় আলীকদমের মাতামুহুরী নদী ও তৈন খালে তঞ্চঙ্গ্যাঁ-চাকমা সম্প্রদায়ের মানুষজন জলবুদ্ধ ও মা-গঙ্গাদেবীকে ফুল নিবেদনের মাধ্যমে বিষু-বিজু উৎসবের সূচনা করেন।

ভোর থেকেই নারী, পুরুষ ও শিশুরা বিভিন্ন স্থান থেকে ফুল সংগ্রহ করে ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে কলাপাতায় সাজানো ফুল নিয়ে মাতামুহুরি নদী-তৈন খালে তীরে জড়ো হন। মোমবাতি জ্বালিয়ে, ফুল অর্পণ করে অতীতের ভুলভ্রান্তির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন তারা। সেইসঙ্গে প্রার্থনা করেন, অতীতের সব দুঃখ-কষ্ট যেন নদীর স্রোতের মতো ভেসে যায় এবং ভবিষ্যত দিনগুলো শান্তি ও সমৃদ্ধিতে কাটে।

আমতলী যুবক কমিটি সভাপতি সোহেল জীত তঞ্চঙ্গ্যাঁ বলেন, অতীতের ভুলভ্রান্তির জন্য জলবুদ্ধ ও মা গঙ্গাদেবীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে আগামী বছর সুখে শান্তিতে থাকার প্রার্থনা জানিয়ে ফুলবিষু উদযাপন করে থাকি।

জেসমিন চাকমা বলেন,ভোরে উঠে বিভিন্ন স্থান থেকে ফুল সংগ্রহ করে নদীতে জলবুদ্ধ ও মা গঙ্গার উদ্দেশ্য ফুল নিবেদন করে,অতীতে ভুল করে থাকলে ক্ষমা প্রার্থনা করেছি। আগামী বছর সুখে শান্তিতে থাকার জন্য আর্শীবাদ চেয়ে আজকে ফুলবিজুর আয়োজনে অংশ নিয়েছি এবং প্রতি বছর এভাবেই নদীতে এসে বিজু উৎসব শুরু করি।

মহিলা সভাপতি জীবন তারা তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, আলীকদমে বসবাসরত তঞ্চঙ্গ্যা ও চাকমা সম্প্রদায় প্রতি বছরের মতো এবছর মাতামুহুরী নদী এবং তৈন খালে তীরে ফুল বিষু-ফুল বিজু উদযাপন করছেন। অতীতের ভুলভ্রান্তির জন্য ক্ষমা প্রার্থণা করে আগামীবছর যেন সবাই সুখে শান্তিতে থাকতে পারি সেই প্রত্যাশায় মা- গঙ্গাদেবীর কাছে প্রার্থনা করেছি।

বান্দরবান,রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি—এই তিন পার্বত্য জেলায় বসবাসরত ১১টি জাতিগোষ্ঠীর (চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, চাক, ম্রো, খুমী, খেয়াং প্রমুখ) মধ্যে এটি সবচেয়ে বড় সামাজিক উৎসব। উৎসবকে কেন্দ্র করে পাহাড়ি জনপদে বইছে আনন্দের আমেজ।

বিষু-বৈসু-বিজু- সাংগ্রাই উপলক্ষে  বিভিন্ন এলাকায় আয়োজিত নানা কর্মসূচির মধ্যে আরো রয়েছে ১০ এপ্রিল বিকেল ৫টা আমতলী জলন্ত মনি পাড়ার মাঠে তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী ঘিলা খেলা টুর্নামেন্ট শুভ উদ্বোধন হয় এবং ১৩ রাতে সমাপ্তি ঘটবে। এদিকে ১৩ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ১৬ এপ্রিল বৌদ্ধ বিহার গুলোতে বুদ্ধ মূর্তি স্নান। ১৭ এপ্রিল থেকে ১৮ এপ্রিল বিভিন্ন মার্মা গ্রামে কাঙ্ক্ষিত মারমা সম্প্রদায়ের রিলংবোই (মৈত্রী পানি বর্ষণ খেলা) অনুষ্ঠানে মধ্যে দিয়ে পাহাড়ের প্রাণের উৎসব সমাপ্তি ঘটবে বলে জানান আয়োজকরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here