আকাশ মারমা মংসিং।। বান্দরবান ।।
বান্দরবানে কয়েক কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে। ফলে থমকে আছে প্রকল্পের অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ। সরকার পতনের পর ঠিকাদাররা আত্মগোপনে যাওয়াই সেসব প্রকল্পের কাজ গতিবিধি না থাকায় ভোগান্তি পড়েছে স্থানীয়রা। শুধু তাই নয় ফান্ডের অর্থ সংকট তৈরী হওয়ার ফলে বরাদ্ধ আসছে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে স্থবির হয়ে আছে বান্দরবানে উন্নয়ন বোর্ডের কয়েক কোটির প্রকল্পের কাজ ।
বান্দরবান জেলাতে বেশিরভাগ ঠিকাদারই আওয়ামী লীগের নেতা বা সমর্থক ছিলেন। যা কারনে ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অনেক ঠিকাদার গা ঢাকা দেয়ায় বন্ধ হয়ে আছে সাতটি উপজেলার উন্নয়নে প্রকল্পের কাজগুলো। উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে বরাদ্ধকৃত বিভিন্ন এলাকার উন্নয়নের কাজ শতভাগের মধ্যে ৫০শতাংশের কাজ এরই মধ্যে আটকে রয়েছে। তাছাড়া উন্নয়ন বোর্ডের বরাদ্ধ বা ফান্ড শুন্যতা হওয়ার থাকার কারণে এমনটাই পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়ন বোর্ডের সূত্র মতে, থানচি বলিপাড়া সাঙ্গু নদী উপর নির্মিত ব্রীজ ১৯ কোটি টাকা ব্যায়ে কাজ শুরু হয়। বর্তমানে ব্রিজটি কাজ শেষ হলেও সংযোগ সড়কের কাজ বন্ধ রয়েছে। একই চিত্র লেমুঝিড়ি সড়ক ও রোয়াংছড়ি হতে রুমা সড়কও। কয়েক কোটি টাকা প্রকল্পের কাজগুলো এখন বন্ধ রয়েছে। শুধু এটি নয় বেশিরভাগ ঠিকাদারই আত্মগোপনে থাকায় সাতটি উপজেলা মিলে প্রায় ৬০ কোটি টাকা উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ স্থবির রয়েছে।
আওয়ামী সরকার আমলে বেশির ভাগ ঠিকাদারই রাজনৈতিক জড়িত ছিলেন। অনেকেই ছিলেন পদপদবীওয়ালা নেতা। এমন হওয়াটাই সেসময় রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছিলো। সর্বশেষ যেসব উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছিলো সেসব কাজের বেশির ভাগ ঠিকাদারই এখন পলাতক। তবে যেহেতু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে কাজগুলো বরাদ্দ হওয়াই- তাই অনেকে অন্যান্য লোকের মাধ্যমে কিছু কিছু কাজ করছে। তবে এই কাজে গতি নেই। ৫ আগস্টের পর পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের উন্নয়নের কাজ মাত্র ৪০-৪৫% কাজ শেষ করে আত্মগোপনে চলে গেছেন তারা।
লেমুঝিরী এলাকা বান্দিন্দা অথোয়াই প্রু মারমা বলেন, শুরুতেই লেমুঝিড়ি পাড়া সড়কের কাজ চলছিল। হঠাৎ সরকার পতনের পর কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এখন বৃষ্টি পড়ার ফলে কাদামাটি স্যাতসেতে পরিণত হয়েছে। ফলে আমাদেরকে ভোগান্তি পড়তে হচ্ছে।
ঠিকাদার মেহেদী জানান, উন্নয়ন বোর্ডের বরাদ্ধ না থাকার ফলে কাজ বন্ধ করে রাখতে হয়েছে। বরাদ্ধ আসলে সেসব উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের বান্দরবান ইউনিটে সরকারী প্রকৌশলী এরশাদ ও সৌমনাথ জানিয়েছেন, ফান্ডে অর্থ সংকট দেখা দিয়েছে। যার কারনে সাতটি উপজেলাতে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে। সাত উপজেলা মিলে ৬০ কোটি টাকার মতন হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের বান্দরবান ইউনিটে নির্বাহী প্রকৌশলী ইয়াছির বীন আরাফাত বলেন, ৫ আগষ্ট থেকে আওয়ামী লীগের অনেক ঠিকাদার পালাতক। আর মালমাল সংকট ও বরাদ্ধ না থাকায় পাবত্য চট্রগ্রাম চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চলমান কাজের মধ্যে সাত উপজেলায় প্রায় ৫০শতাংশ কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে। আমরা বরাদ্ধ চেয়ে আবেদন করেছি বরাদ্ধ পেলে কাজ গুলো পুনারায় শুরু হবে জানান তিনি।