আকাশ মারমা মংসিং।।বান্দরবান।।
বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে দুটি ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনায় কুকি-চিন ন্যশনাল ফ্রন্ট কেএনএফের গ্রেপ্তার হওয়া ৫৪ জন সদস্যকে কারাগারে প্রেরণ করেছে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
মঙ্গলবার ( ৯ এপ্রিল) বেলা চারটায় চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আনা হলে জামিন না মঞ্জুর করে ৫৪ জন আসামীকে কারাগারে পাঠানো নির্দেশ দেন বিচারক মো: নাজমুল হোছাইন।
আসামী পক্ষে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট কাজী মহতুল হোসাইন যত্ন বলেন, আটককৃত আসামীরা কেউ রুমা ও থানচি ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় জড়িত নয়। ঈদের ছুটি শেষে আদালতের তোলার পর জামিন চাওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে গেল মঙ্গলবার ও বুধবার দুইদিন কয়েকশত কেএনএফ সন্ত্রাসীরা পরিহিত পোশাক, মুখে কালো ও হাতে অস্ত্র নিয়ে রুমা ও থানচিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে লুটপাট চালায় সন্ত্রাসীরা। এসময় ব্যাংকে টাকা রাখা ভল্ট ভাঙ্গতে না পেরে টহলকারী পুলিশ ও আনসার সদস্যদের কাজ থেকে ১৪টি অস্ত্র ও ব্যাংক ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে অপহরণসহ থানচি দুটি ব্যাংক থেকে ১৮ লাখ টাকা লুটপাট ও একই সাথে স্থানীয়দের মারধরের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি মোবাইল লুট করে নিয়ে পালিয়ে যান নতুন গজিয়ে ওঠা সশস্ত্র সন্ত্রাসী কুকি-চিন ন্যশনাল ফ্রন্ট কেএনএফ।
ঘটনাটির পর বৃহস্পতিবার সকালে রুমায় ব্যাংক লুটপাটের ঘটনাস্থলে পরিদর্শনের আসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান জামান খান, পুলিশ আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ও জেলা প্রশাসন শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উর্ধতন কর্মকর্তারা। এসময় পরিদর্শন করেন উপজেলা পরিষদ,লুটপাট হওয়ার ব্যাংক ও মসজিদ।
পরিদর্শন শেষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সাংবাদিকদের বলেন, কোন ধরনের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজি বাংলাদেশের মুল ভূখণ্ডের ভেতরে এ ধরনের অন্যায় ও কর্মকান্ড করতে দেওয়া হবে না। । যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা জঘন্য অপরাধ করেছে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। কাজেই আমাদের যা যা করণীয় আমরা সেটি করে যাব। আমরা এই অঞ্চলে শান্তি শৃঙ্খলা ফেরাতে এই অঞ্চলে র্যাব, পুলিশ, আনসার বিজিবিসহ সকল ধরনের শৃঙ্খলা বাহিনী বৃদ্ধি করা হবে এবং পরবর্তীতে যৌথভাবে সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হবে।
অন্যদিকে রবিবার রুমা ও থানচিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউল্লাহ। এসময় স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে বান্দরবানের সেনা ক্যান্টমেন্টে এসে সাংবাদিকদের বলেন, শান্তি আলোচনার ছত্রছায়ায় দিনের পর দিন সন্ত্রাসীরা কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়েছে। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ তাদের যে উদ্দেশ্য পরিকল্পনা করা হয়েছে সেটিকে সমন্বিতভাবে যৌথবাহিনী পরিচালনা মাধ্যমে পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রতিহত করা হবে।
পাহাড়ের শান্তি ফেরাতে এরই মধ্যে সাড়াশি অভিযান চালিয়েছে যৌথ বাহিনীরা। নতুন গজিয়ে ওঠা সশস্ত্র গোষ্ঠীর কুকি-চিন ন্যশনাল ফ্রন্ট কেএনএফ সদস্যদের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবহৃত গাড়ি, অস্ত্র, কার্তুজ, ল্যাপটপ, পরিহিত পোশাক ও বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম এবং চালকসহ কেএনএফের মোট ৫৫ জন সদস্যদের গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনী। তারমধ্যে নারী রয়েছেন ১৯ ও পুরুষ রয়েছে ৩৬ জন।
এদিকে বেলা চারটায় রুমা ও থানচিতে দুটি ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনায় কুকি-চিন ন্যশনাল ফ্রন্ট কেএনএফের সদস্যদের বান্দরবানে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তোলা হয়। পরে না মঞ্জুর করে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করেন বিচারক।
এবিষয়ে বান্দরবান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হোসাইন মোহাম্মদ রায়হান কাজেমী বলেন, বান্দরবানে যৌথ বাহিনীর পৃথক অভিযানে বিভিন্ন আটককৃত কেএনএফের ৫৪ সদস্যকে আদালত তোলা হলে জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেছে আদালত।