ডেক্স রিপোর্ট।।
বান্দরবানের রুমা উপজেলায় সাংবাদিকতা পেশার গৌরবময় ঐতিহ্য ও নৈতিক ভিত্তি বর্তমানে মারাত্মক প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। কারণ,স্থানীয় এক কাঠ ব্যবসায়ী পিপলু মার্মা নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তথ্যবিকৃতি ও ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য সাধনের একটি বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তিনি সম্প্রতি নিজেকে একটি অনলাইন পোর্টালের (দর্পণ টিভি) "জেলা প্রতিনিধি" হিসেবে ঘোষণা দিয়ে সাংবাদিকতার ভূমিকায় আত্মপ্রকাশ করলেও—তাঁর নামে নেই কোনো অনুমোদিত সাংবাদিকতার প্রশিক্ষণ, নেই সরকারি স্বীকৃত কোনো প্রেস কার্ড, এমনকি কোন প্রেস ক্লাবেও তিনি সদস্য নন।
ভুয়া পরিচয়ে সাংবাদিকতা: উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার ও হয়রানির অভিযোগ
বিশ্বস্ত সূত্রমতে,পিপলু মার্মা স্থানীয় বন বিভাগের গাছের কেরানী উজ্জ্বল নামের একজন সরকারি ইউনিফ্রম'র নিয়ে একাধিক বিভ্রান্তিকর ও মানহানিকর প্রতিবেদন ছড়িয়ে দেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ‘ইউনিফর্ম সংক্রান্ত আইন লঙ্ঘন’ এর অভিযোগ তুলে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে উজ্জ্বলকে সামাজিকভাবে হেয় করার এই অপচেষ্টার মূল উদ্যোক্তা হিসেবে পিপলুর নাম উঠে আসে। অভিযোগ রয়েছে—তিনি নিজেই এসব তথাকথিত সংবাদ তৈরি করে বিভ্রান্তিকর শিরোনামে বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল ও ফেসবুক গ্রুপে প্রচার করেন, যাতে প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের দৃষ্টিকে ভিন্নমুখী করা যায়।
সাংবাদিকতার পবিত্রতা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা: পেশার মর্যাদার ওপর সরাসরি আঘাত
সাংবাদিকতার মতো দায়িত্বশীল ও জনকল্যাণমুখী পেশার মোড়কে ব্যক্তি-স্বার্থ ও প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার এই ঘটনা স্থানীয় সাংবাদিক সমাজকে ক্ষুব্ধ ও বিস্মিত করেছে। তাঁরা জোর দিয়ে বলছেন—একজন পেশাদার কাঠ ব্যবসায়ী কীভাবে হঠাৎ করে সাংবাদিক হয়ে গেলেন? তার নামে কোনো সাংবাদিক তালিকাভুক্তি নেই,কোনো প্রশিক্ষণ নেই,অথচ সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে প্রশাসনের ওপর প্রভাব বিস্তারের অপচেষ্টা চলছে—এটি কি মত প্রকাশের স্বাধীনতা, নাকি একধরনের সামাজিক নৈরাজ্য সৃষ্টির কৌশল?
সাংবাদিক নেতাদের প্রতিক্রিয়া: ‘এটি সুপরিকল্পিত অপচেষ্টা’
বান্দরবানের প্রবীণ সাংবাদিক,এটিএন বাংলার জেলা প্রতিনিধি ও জেলা প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিনারুল হক বলেন,পিপলু মার্মা নামে কোনো পেশাদার সাংবাদিককে আমি চিনি না। সাংবাদিকতা করতে হলে পেশাগত ন্যূনতম প্রস্তুতি প্রশিক্ষণ ও নৈতিকতা থাকা আবশ্যক। সে যদি সত্যিকারের সাংবাদিক হয়,তবে তার পেশাগত পরিচয়পত্র ও স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান প্রকাশ করুক। প্রশাসনের এখনই বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। সাংবাদিকতা নয়,এটি প্রভাব বিস্তারের হাতিয়ার?
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা একবাক্যে বলছেন—এটি নিছক ভুয়া পরিচয়ের আড়ালে এক সামাজিক প্রতারণার উদাহরণ। একজন ব্যক্তি যদি সংবাদমাধ্যমকে নিজের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেন,মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তথ্য ছড়িয়ে কারো সম্মানহানি ঘটান,তবে সেটি স্পষ্টভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন,মানহানিকর অপরাধ ও ভুয়া তথ্য প্রচারের আওতায় পড়ে।
প্রশাসনের কাছে জোর দাবি: স্বচ্ছ তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা প্রয়োজন
এই প্রেক্ষাপটে রুমার সচেতন নাগরিক সমাজ ও সাংবাদিক মহল প্রশাসনের কাছে কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তাঁদের ভাষায়—এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়,বরং সাংবাদিকতার মুখোশ পরা এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর সুপরিকল্পিত অপতৎপরতা, যা এখনই দমন করা জরুরি। প্রশাসনের উচিত দ্রুত তদন্ত করে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
সাংবাদিকতা কোনো ব্যবসার হাতিয়ার নয় সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা—এটি জনসচেতনতা সৃষ্টি,দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রাখা ও সমাজের কল্যাণে কাজ করার মাধ্যম। কেউ যদি এই পেশাকে আড়াল করে প্রতারণা,হয়রানি ও নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য ব্যবহার করে,তবে তা শুধুই সাংবাদিকতা নয়—এটি একটি গুরুতর সামাজিক অপরাধ।
এখন সময় এসেছে—প্রশাসনের কঠোর অবস্থান গ্রহণের। ভুয়া পরিচয়ধারীদের মুখোশ উন্মোচন করে পেশাগত সাংবাদিকতার সম্মান পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার।
সম্পাদক: হ্লাথোয়াইচিং মারমা (ভদন্ত নাইন্দিয়া থের)
নির্বাহী সম্পাদক: মংহাইথুই মার্মা
প্রধান কার্যালয়ঃ রুমা বাজার, মসজিদ গলি,রুমা, বান্দরবান পার্বত্য জেলা।
অফিস হটলাইন নাম্বার: +8801606760388
ইমেইল : rumabarta23@gmail.com