আকাশ মারমা মংসিং।। বান্দরবান।।
"সাংগ্রাইমা ঞিঞি ঞাঞা হির্কেজেহ পাহমে" যার অর্থ হল- বৈসাবী আসছে চলো একসাথে মৈত্রীবর্ষন খেলি' এ-ই মধুর সুরের ছন্দে পুরো পাহাড় এখন উৎসবের আমেজ। মারমা সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান উৎসব মাহা: সাংগ্রাই পোয়ে:। এই উৎসবকে ঘিরে প্রতিটি পাহাড় ও প্রত্যেক গ্রামপল্লীতে সেজেছে বর্ণিল সাজসাজ রব। মাসব্যাপী এই আয়োজনকে ঘিরে পুরো পাহাড় জুড়ে বইছে আনন্দের হাওয়া। পাহাড়ের আনাচে কানাচে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মারমা সম্প্রদায়ের সামাজিক উৎসবটি ছড়িয়ে পড়েছে। আজ থেকে আনন্দে শোভযাত্রা মাধ্যমে শুরু হয়েছে মারমাদের ঐতিহ্যবাহী উৎসব মাহা: সাংগ্রাই পোয়ে:।
আয়োজকেরা জানিয়েছেন, ১৪ তারিখে শুরু হবে মুল আনুষ্ঠানিকতা। সকালে বিহারের দায়ক-দায়িকাদের উদ্দ্যেশে ছোয়াইং (আহার) ফলমুল ও অর্থদান, বিকালে বুদ্ধাস্নান ও রাতে বিভিন্ন গ্রামের পিঠা তৈরি করা হবে। ১৫ এপ্রিল সোমবার রাজার মাঠে মৈত্রী পানি বর্ষণ ও শেষদিনে একই স্থানে মৈত্রী পানি বর্ষণের পাশাপাশি নিজেদের ঐতিহ্য সংস্কৃতি পোশাকে নৃত্যরত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে উৎসব উদযাপন পরিষদ।
[caption id="attachment_1862" align="alignnone" width="300"] সাংগ্রাই পোয়ে উৎসবের সংস্কৃতি পোশাকে মারমা তরুন- তরুনীরা। আজ শনিবার সকালে বান্দরবান শহরে থেকে তোলা। ছবি: রুমা বার্তা[/caption]
সকাল আটটায় বান্দরবানের ঐতিহ্যবাহী রাজার মাঠ প্রাঙ্গনে নিজেদের সংস্কৃতি পোশাকে জড়ো হন ১২টি সম্প্রদায়ের জাতিগোষ্ঠীর। এছাড়াও বিভিন্ন পেষ্টুন ব্যানার নিয়ে ছোট-বড় সকল বয়সের মানুষ শোভাযাত্রায় অংশ নেন। এসময় আকাশে বেলুন উড়িয়ে সাংগ্রাই পোয়ে: শুভ উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। পরে জেলা শহর জুড়ে বের করা হয় বর্ণাঢ্য মঙ্গলময় শোভাযাত্রায়। অংশ নেন ১২টি সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর।
পরে প্রতিটি ফোঁটা-ই হোক শান্তির দুত' পৃথিবী হোক শান্তিময় জলধারায়" স্লোগানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিউট হল রুমে শুরু হয় বয়োজ্যেষ্ঠ পূজা। সে পূজায় বয়োজ্যেষ্ঠদের মাঝে মোমবাতি, আগরবাতি, দেশলাই, ফলমূলসহ দান করেন আয়োজকরা।
লিলিপ্রু মারমা বলেন, দীর্ঘ একবছর অপেক্ষা করে থাকি এই দিনটির জন্য। পুরানক বছরের গ্লানি মুছে নতুন বছরকে গ্রহন করতে এই অপেক্ষা। খুব ভালো লাগছে, আমরা পানি খেলা খেলবো, অনেক মজা করবো।
হ্লাহ্লা সে ও শৈখিং মারমা বলেন, নিজেদের সংস্কৃতি পোশাক পরে বিহারে ছোয়াই(আহার) দিতে যাবো' রাত্রে পিঠা বানাবো ও সবশেষে আমরা পানি উৎসবের মেতে উঠবো। তাই আমরা সবাই এক্সাইটেড।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে বিভিন্ন ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী আছি, তারা প্রত্যেকেই নববর্ষ পালন করে থাকেন। এই নববর্ষে অতিতের ভুল ভ্রান্তি গ্লানি দুঃখ কষ্টকে মুছিয়ে একটা সুন্দর সকাল পাবো। এবং সম্প্রীতির ভাতৃত্বের বন্ধনে অসাম্প্রদায়িক চিন্তাচেতনায় আমরা আগামীতেও এগিয়ে যাবো।
পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন বলেন, পাহাড়ের নববর্ষ ও সাংগ্রাই পোয়ে: উৎসবকে ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বদা মাঠে প্রস্তুত রয়েছে।
সম্পাদক: হ্লাথোয়াইচিং মারমা (ভদন্ত নাইন্দিয়া থের)
নির্বাহী সম্পাদক: মংহাইথুই মার্মা
প্রধান কার্যালয়ঃ রুমা বাজার, মসজিদ গলি,রুমা, বান্দরবান পার্বত্য জেলা।
অফিস হটলাইন নাম্বার: +8801606760388
ইমেইল : rumabarta23@gmail.com