স্টাফ রিপোর্টার।।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম পাহাড়ের বুকে বেড়ে ওঠা সম্ভাবনাময়ী মেধাবী শিক্ষার্থী হেমা চাকমা।
হেমা চাকমা খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার ২নং চেঙ্গী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান অনিল চন্দ্র চাকমা ও মিনতি চাকমার মেয়ে। হেমা চাকমা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউট এর ৪র্থ বর্ষ, সেশন:২০২০-২১ এর ছাত্রী।
হেমা পুজগাং মুখ বনশ্রী শিশু নিকেতন (কেজি স্কুল) থেকে প্রাথমিক শিক্ষা জীবন শুরু করেন। পরে পুজগাং মুখ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হন।
গতকাল তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে একটি স্ট্যাটাসের মাধ্যমে ডাকসু নির্বাচনে নিজের প্রার্থীতা ঘোষণা করেন। স্ট্যাটাসটি হুবুহু তুলে ধরা হলোঃ-
“বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্যতান, এবার ডাকসু হোক বহুত্ববাদের প্রাণ”
আমি হেমা চাকমা, আমাদের বহুল প্রতীক্ষিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করছি।
আমরা যাঁরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আমরা জানি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের প্রাণের জায়গা, কতটা আমরা স্বপ্নে বিভোর থাকি। কিন্তু ভর্তি হওয়ার পর আশা গুড়ে বালি হয়। যার দায় বর্তায় প্রশাসনের উপর। আবাসন, খাবার-দাবার, স্বাস্থ্য, পরিবহন, একাডেমিক, স্যানিটেশন, গবেষণা, সাংস্কৃতিক,
ক্লাস-রুম কিংবা খেলাধুলা সব জায়গাতে আমরা বার বার পিছিয়ে যাচ্ছি। আমাদের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে যে মৌলিক চাহিদাগুলো থাকা দরকার, তা নিয়ে আমরা মোটাদাগে অসন্তুষ্ট। আমি নিশ্চিত করতে চাই “শিক্ষার্থী-বান্ধব পরিবেশ”। প্রতিটি শিক্ষার্থীর চাওয়া-পাওয়া যেন প্রশাসনের সিদ্ধান্তে মূল্যায়িত হয়।কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল স্টেকহোল্ডার শিক্ষার্থীরা।
আমাদের ক্যাম্পাস গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চার অন্যতম ক্ষেত্র। একজন বিত্তমান বাবার সন্তান যেমন আছে, তেমনি দিনমজুর বাবার সন্তানও আছে, একি সাথে বিভিন্ন জাতি-ধর্মে-বর্ণ নির্বিশেষে যারাই আছি আমাদের দরকার ন্যায্য অধিকার।
এবারের ডাকসু’তে যাতে বহু ভাষা, জাতি ও সংস্কৃতির অংশগ্রহণে বহুত্ববাদের বাংলাদেশ বিনির্মানে সহায়ক হয় তাঁর জন্য সচেষ্ট থাকব। আমার ক্যাম্পাসজীবনে যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমি সোচ্চার ছিলাম, জুলাই-আন্দোলনে সক্রিয় ছিলাম স্রোতের বিপরীতে দাড়িয়ে, কারণ আমি থাকতাম গণরুমে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম।
বিশেষ করে ধর্ষণবিরোধী মুভমেন্টে আমার কঠোর অবস্থান ছিলো, স্বাস্থ্য-বীমা সংক্রান্ত সচেতনামূলক সেমিনার,নারী শিক্ষার্থীদের স্লাটশেমিং এর বিরুদ্ধে, হলগুলোতে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা এবং জুলাই-পরবর্তী সময়েও নিজ এলাকায় গ্রাফিতি কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছি।
আমি বন্যায় আক্রান্তদের জন্য নিজ উদ্যোগে ফান্ড রেইজ করেছি এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে সহায়তা পৌঁছে দিয়েছি, এলাকায় স্কুলের অবকাঠামো নির্মাণেও সহযোগিতা করেছি। আমি বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক ক্লাবে সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে পারফর্ম করেছি। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি হয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিনিধিত্ব করেছি। আন্তর্জাতিক প্রজেক্টে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রতিনিধিত্ব করেছি।
এছাড়াও আমি ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন সময়ে ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে কাজ করেছি। ইউনিসেফ, ইউনেস্কো,মালালা ফান্ডের প্রজেক্টসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফান্ডে এবং বিভিন্ন পলিসি ডায়লগেও অংশ নিয়েছি। আমি বিশ্বাস করি আমার কাজের সামষ্টিক অভিজ্ঞতা আমাকে একজন যোগ্য প্রতিনিধি গড়ে তুলেছে।
সর্বোপরি, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায্য এবং যৌক্তিক অধিকারের পক্ষে আপোষহীন থাকব। প্রকৃতপক্ষে একজন শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতকরণে আমার বোল্ড স্টেটমেন্ট থাকবে। নির্বাচনে জয়ী হই বা না হই শিক্ষার্থীদের প্রশ্নে আমার কণ্ঠস্বর জারি থাকবে।
আপনার প্রতিটা শব্দ, মতামত, সাজেশন আমার গুরুত্বপূর্ণ। আমাকে পরামর্শ দিয়ে কিংবা আপনার ফেসকৃত সমস্যাগুলো তুলে ধরুন। আমি শীঘ্রই আমার নির্বাচনি ইশতেহার নিয়ে হাজির হবো।সবার সহযোগীতা, সমর্থন ও দোয়া প্রার্থী।
সম্পাদক: হ্লাথোয়াইচিং মারমা (ভদন্ত নাইন্দিয়া থের)
নির্বাহী সম্পাদক: মংহাইথুই মার্মা
প্রধান কার্যালয়ঃ রুমা বাজার, মসজিদ গলি,রুমা, বান্দরবান পার্বত্য জেলা।
অফিস হটলাইন নাম্বার: +8801606760388
ইমেইল : rumabarta23@gmail.com