অংবাচিং মারমা।।বার্তা রিপোর্ট।।
বান্দরবানে রুমা উপজেলায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান কঠিন চীবর দান না করার পক্ষে মত দিয়েছেন রুমায় বৌদ্ধ ভিক্ষুরা। পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে বৌদ্ধ ভিক্ষু,বৌদ্ধ ধর্ম গুরু নেতাদের নিয়ে আসন্ন প্রবারণা উৎসব ও কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিমূলক সভা আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন।
আজ ১৪ অক্টোবর উপজেলা সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় আগের সিদ্ধান্তে অটল থাকার কথা জানান রুমায় পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের নেতারা।
সভায় প্রবারণা উৎসব উদযাপন কমিটির আহব্বায়ক উহ্লামং মারমা বলেন,সাম্প্রতিক রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে বৌদ্ধ বিহার ও বৌদ্ধ মূর্তীকে আগুনের পুরিয়ে দিয়েছিলো তাই আমাদের রুমা উপজেলায় বিগত বছরগুলোতে যেভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে আনন্দপূর্ণভাবে উৎসব করা হয়- এ বছর সেভাবে হচ্ছে না। তবে প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
এসময় মারমা ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি উথোয়াইচিং মারমা বলেন,প্রত্যেক বছরের আনন্দ পূর্ণভাবে উৎসব করা হয়। এ বছরের সেভাবে হবে না।
সভায় উপস্থিত উপজেলা বিভিন্ন বৌদ্ধ ধর্মীয় উপাসনালয়,মন্দির ও প্যাগোডার বৌদ্ধ ভিক্ষুরা স্ব স্ব বক্তব্যে বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি জেলায় ঘটে যাওয়া ঘটনায়, বৌদ্ধ ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা, ভাঙচুর, দান বাক্স লুটপাটসহ বৌদ্ধ মূর্তি ভেঙ্গে ফেলাটা আমাদের হৃদয়ে বিশ্বাসের জায়গায় আঘাত করেছে। সে জন্য আমরা ভিক্ষুসংঘ চরম মর্মাহত।
রুমা উপজেলা আশ্রম পাড়া বিহারাধ্যক্ষ ও পার্বত্য ভিক্ষু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক উঃ নাইন্দিয়া থেরঃ বলেন,ঘটনার পর থেকে অনেকটা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তিন পার্বত্য জেলার বৌদ্ধ ভিক্ষু সংঘের শীর্ষস্থানীয় নেতারা এবারের কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান না করার জন্য যে ঘোষণা দিয়েছেন, সে ঘোষণার বিপক্ষে যাওয়ার সুযোগ নেই।
তিনি আরো বলেন, প্রবারণা পূর্ণীমা উৎসবের কেন্দ্রীয় ছাড়া কোনো পাড়ায় ফানুস উত্তোলন হবে না,কারন বৌদ্ধ ধর্মের নিয়ম অনুযায়ী,সব বৌদ্ধ সম্প্রদায় ও ভিক্ষুগণের এই তিন মাস হলো সাধনার মাস। এই তিন মাস ভিক্ষুরা নিজ নিজ বিহার, মন্দির, ক্যাং, প্যাগোডা বাহিরে অবস্থান করা নিষেধ। কেউ এক রাতের জন্যও বাইরে অবস্থান করলে তার তিন মাসের সব সাধনা বিফলে যাবে। কিন্তু খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটির ঘটনায় এমনও হয়েছে যে, বিহারে ধুঁকে ডান বাক্স লুটপাট,বৌদ্ধ মূর্তী ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ ও ভেঙ্গে ফেলাটা আমাদের হৃদয়ে বিশ্বাসের জায়গায় আঘাত করেছে।
সভায় কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান ও প্রবারণা উৎসব পালনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভয় দিলেও বৌদ্ধ ভিক্ষুরা তাদের নেতাদের সিদ্ধান্তের অনড় থাকেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আতিকুর রহমান সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন বিজিবি কমান্ডার,রুমা থানা ইনচার্জ মোঃ শাহাজাহান,কাজী রাব্বী জোবায়ের,সেনাবাহিনী সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মোঃ শওকত হোসেন,সহকারি পরিচালক -৪ আনসা ব্যাটেলিয়ান মোঃ আল আমিন,পাইন্দু পাড়া বিহারাধ্যক্ষ ও রুমা উপজেলা পার্বত্য ভিক্ষু পরিষদের সভাপতি উঃ সুন্দারা মহাথের,রুমা দেব্ব বৌদ্ধ বিহারধ্যক্ষ উঃ চাইন্দাসারা মহাথের,পলিতন পাড়া বৌদ্ধ বিহারধ্যক্ষ উঃ নাইন্দাসারা মহাথের,পার্বত্য ভিক্ষু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক উঃ নাইন্দিয়া থের ,প্রবারণা পূর্ণীমা উদযাপন কমিটির আহব্বায়ক ও পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উহ্লামং মারমা,সদর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অংসিংনু মারমা ও রুমা উপজেলা কর্মরত সাংবাদিকগণ সহ রুমা উপজেলা রুমা যুব সমাজের সভাপতি মংহাইনু মারমাসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
সম্পাদক: শৈমং মার্মা (শৈবং)
নির্বাহী সম্পাদক: মংহাইথুই মার্মা
প্রধান কার্যালয়ঃ রুমা বাজার, মসজিদ গলি,রুমা, বান্দরবান পার্বত্য জেলা।
ফোন:০১৬৭৭১৪২৯৪৫,০১৫৫৩১২২৩৮৮।
ইমেইল : rumabarta23@gmail.com
www.rumabarta.com