[ad_1]
টানা চতুর্থবারের মতো জাতীয় সংসদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে আওয়ামী লীগ। ঘোষিত ২৯৮টি আসনের মধ্যে দলটির ২২২ জন নির্বাচিত হয়েছেন। এই প্রার্থীদের ৪৬ জনই প্রথমবার জাতীয় সংসদে যাচ্ছেন। তাঁরাসহ এবারের নির্বাচনে ৯৫ জন নতুন মুখ বিজয়ী হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৪৭ জন স্বতন্ত্র, জাতীয় পার্টির ১ জন এবং কল্যাণ পার্টির ১ জন এবারই প্রথম বিজয়ী হয়েছেন। এ ছাড়া পাঁচজন নারী প্রথমবারের মতো নির্বাচনে লড়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। অবশ্য এর আগে তাঁরা সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের তিন মেয়াদেই বিরোধী বিএনপির নেতৃত্বে আন্দোলন-সংগ্রামে মাঠে ছিলেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে চট্টগ্রাম-৫ আসন থেকে নির্বাচন করে পরাজিত হন তিনি। দলটির সঙ্গে চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনে থাকলেও গত নভেম্বরে হঠাৎ নির্বাচনে আসার ঘোষণা দেন সৈয়দ ইবরাহিম। নিজ এলাকা ছেড়ে পাশের জেলা কক্সবাজার-১ আসন থেকে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়েই বিজয়ী হয়েছেন তিনি।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত দলটির চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা এ এস কে একরামুজ্জামান। নবম ও একাদশ সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছিলেন তিনি। সিলেট-৫ আসনে লড়ে প্রথমবারের মতো বিজয়ী হয়েছেন মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী। তাঁর বাবা প্রয়াত আবদুল লতিফ চৌধুরী সারা দেশে ‘ফুলতলী হুজুর’ হিসেবে পরিচিত।
আওয়ামী লীগ থেকে ৪৬ জন নতুন মুখের মধ্যে অন্যতম হলেন মাগুরা-১ আসন থেকে নির্বাচিত ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, ঢাকা-১০ আসনের চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ। এ ছাড়া বাবার আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সংসদে প্রথমবারের মতো পা রাখতে চলেছেন মাজহারুল ইসলাম সুজন (ঠাকুরগাঁও-২), গালিবুর রহমান শরীফ (পাবনা-৪), মুহিত উর রহমান শান্ত (ময়মনসিংহ-৪), সোলায়মান সেলিম (ঢাকা-৭), ময়েজ উদ্দিন শরীফ (হবিগঞ্জ-২) এবং এস এম আল মামুন (চট্টগ্রাম-৪)। আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা তোফায়েল আহমেদের জামাতা তৌহিদুজ্জামান তুহিন যশোর-২ আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য হচ্ছেন।
সিরাজগঞ্জ-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে বিজয়ী হয়ে প্রথমবারের মতো জাতীয় সংসদে পা রাখতে চলেছেন জান্নাত আরা হেনরী, যদিও ২০০৮ সালের নির্বাচনেও তিনি লড়েছিলেন। সেবার বিএনপির প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন তিনি। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন (খুলনা-৩) ও শফিউল আলম চৌধুরী (মৌলভীবাজার-২), তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ (চাঁদপুর-১), বিজ্ঞান সম্পাদক আবদুস সবুর (কুমিল্লা-১), কার্যনির্বাহী সদস্য সাঈদ খোকন (ঢাকা-৬), ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এম বদিউজ্জামান সোহাগ (বাগেরহাট-৪), ছাত্রলীগের সাবেক নেতা বিপ্লব হাসান পলাশ (কুড়িগ্রাম-৪), আওয়ামী লীগের সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য আলাউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী নাসিমও (ফেনী-১) প্রথমবারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদও (জামালপুর-৫) প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্যদের মধ্যে সুলতানা নাদিরা (বরগুনা-১), রুমানা আলী টুসি (গাজীপুর-৩), খাদিজাতুল আনোয়ার সনি (চট্টগ্রাম-২) আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এবং তাহমিনা বেগম (মাদারীপুর-৩), আমাতুল কিবরিয়া চৌধুরী কেয়া (হবিগঞ্জ-১) স্বতন্ত্র নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছেন। জাতীয় পার্টির আশরাফুজ্জামানও (সাতক্ষীরা-২) প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য হয়েছেন।
আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টি ও শরিকদের ৩২টি আসনে ছাড় দিয়েছিল। এর মধ্যে ১৯ আসনে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তাঁদের ১৭ জনই নতুন মুখ। তাঁদের অন্যতম আওয়ামী লীগ নেতা কামারুল আরেফিন (কুষ্টিয়া-১), আবদুল্লাহ নাহিদ নিগার (গাইবান্ধা-১) ও মহিউদ্দিন মহারাজ (পিরোজপুর-২)। নৌকা প্রতীকে ভোট করা জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুকে পরাজিত করেছেন কামারুল আরেফিন। মহিউদ্দিন মহারাজ হারিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে। মহারাজ ছিলেন মঞ্জুর এপিএস। আবদুল্লাহ নাহিদ নিগার হারিয়েছেন জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারীকে।
এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে আলোচিত আরও রয়েছেন ব্যবসায়ী এ কে আজাদ (ফরিদপুর-৩) ও ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন (হবিগঞ্জ-৪) অন্যতম। তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলীকে পরাজিত করেছেন।
[ad_2]