টাকা না দিলে চাপা পড়ে যায় ফাইল; লামায় আদালতের জিআরও বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ

0
23

বিপ্লব দাশ,লামা প্রতিনিধি।।

বকশিশ ও খরচাপাতি নামে বিচার প্রার্থীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন হাজার টাকা।

চাহিদা অনুযায়ী টাকা না দিলে সেবা ও মামলার ফাইল নড়ে না।

আদালতে আসা বিচারপ্রার্থীরা পদে পদে চরম হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

জিআরও’র ঘুষ বাণিজ্য থেকে রেহাই পাননি একাধিক আইনজীবীও। 

জিআরওকে টাকা দিলে এককে দুই আর দুইকে এক করার হাতের ময়লা।

তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবী জিআরও আনোয়ারে।

তথ্যটি যাচাই বাছাই করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে “পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ”

বান্দরবানের লামা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নিবন্ধক কর্মকর্তা (জিআরও) মো. আনোয়ার হোসাইনের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বকশিশ ও খরচাপাতির নামে বিচার প্রার্থীদের থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন শত থেকে  হাজার টাকা।

অভিযোগ আছে, আদালতের অফিসের কাজকর্ম করতে চাহিদা অনুযায়ী টাকা না দিলে সেবা ও মামলার ফাইল নড়ে না। ফলে বাধ্য হয়ে দিতে হয় টাকা এমন অভিযোগ জিআরও মো. আনোয়ার হোসাইনের বিরুদ্ধে জানান বিচারপ্রার্থীরা।

অনুসন্ধানে জানা যায়,জিআরও কারণে আদালতে আসা বিচারপ্রার্থীরা পদে পদে চরম হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন । জিআরও তারিখ বাণিজ্য, মামলার নথি দেখা,হাজিরা দেয়া,ওকালতনামায় সই করা,জামিননামা দেওয়া,মামলা লিস্টে আনা,শুনানির সিরিয়াল এগিয়ে আনা,জামিনের শুনানি করা,মামলার নকল তোলাসহ মামলাসংক্রান্ত যেকোনো সেবা পেতে বকশিশ বা খরচাপাতি নামে ঘুষ নেন জিআরও মো: আনোয়ার হোসাইন।

শুধু বিচারপ্রার্থী নয় অনেক আইনজীবিও জিআরও’র ঘুষ বাণিজ্য থেকে রেহাই পাননি বলে জানিয়েছেন একাধিক আইনজীবী।

বেশ কয়েকজন আইনজীবী বলেন,আদালতে জিআরও কারসাজিতেই সবকিছু নাড়াছাড়া হয়। টাকা দিলে সবই করতে পারেন জিআরও। আর টাকা না দিলে কিছুই করতে পারেন না। জিআরও কাছে  টাকা দিলে এককে দুই আর দুইকে এক করা কোনও ব্যাপারই না।

তারা আরও বলেন,জিআরওর নানা রকম কৌশল রয়েছে। কিভাবে বিচারপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া যায়,তারা ভালো জানেন। ধার্য তারিখ পরিবর্তন সহ বিভিন্ন কৌশলে বিচারকাজকে বাধাগ্রস্ত করেন জিআরও।

জিআরও দ্বারা হয়রানির শিকার  ভুক্তভোগী সালমান শাহ বলেন,আমি গাড়ী জিম্মার আবেদন করেছিলাম।  আমার থেকে  দেড় থেকে দুই হাজার করে কয়েক ধাপে টাকা  নিয়েছে । পরে পুলিশ তদন্তের রিপোর্টে বিচারকের স্বাক্ষর নেওয়ার নাম করে ১০ হাজার টাকা দাবী করেন জিআরও মো:আনোয়ার হোসেন। আমি কষ্ট করে ৫ হাজার টাকা দিলে সময় ক্ষেপণ করে ৩-৪ মাস পর কাজ করে দেয়। একই অভিযোগ এনে ফারুক নামে আরেক ভুক্তভোগী বলেন,পুলিশ তদন্তের পর গাড়ী জিম্মার আবেদন গ্রহন করি। বিচারক ছাড়পত্র দেওয়ার পরও টাকার জন্য প্রায় ৩ মাস যাবত রিপোর্ট থানায় পাঠায় নি  জিআরও। পরে ২ হাজার টাকা দিতে হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী বলেন,এক মামলায় অভিযুক্ত নয় এমন আসামির অব্যাহতি চেয়ে  বিচারকের কাছে  চার্জশিট দাখিল করেন পুলিশ। কিন্তু জিআরও তা ম্যাজিষ্ট্রেটকে অবগত না করে,  আমাকে বারংবার ফোন দিয়ে ডেকে নিয়ে  ১০ হাজার টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। ১০ হাজার টাকা থেকে ২’শ টাকা কম হলেও ফাইল নড়বে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়।

অভিযোগ অস্বীকার করে জিআরও আনোয়ার হোসাইন বলেন, আমার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ গুলো সত্য নয়। আপনারা যাচাই করে দেখতে পারেন।

লামা কোর্টের সিএসআই ধীমান বড়ুয়া বলেন,এবিষয়ে আমি অবগত না,বিস্তারিত সাক্ষাতে আলাপ করব।

এবিষয়ে বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ কাওছার বলেন,অভিযোগ গুলো আমাকে হোয়াটস অ্যাপে পাঠান। যাচাই করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here